ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১২

ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জহুরুল হক হল সংলগ্ন পলাশীতে নবনির্মিত ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালার উদ্বোধন করা হয়েছে।
 
ভাষা সৈনিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান রোববার বিকেলে এ স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন।


 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শহীদ আবুল বরকতের মামাতো ভাই আর এম ত্বাহা শহীদ ভাষা সৈনিকের ব্যবহার্য সামগ্রী, স্মৃতিচিহ্ন, হাতঘড়ি, একুশে পদক ও ১০ কপি ডকুমেন্টারি ফিল্ম উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের কাছে হস্তান্তর করেন।
 
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে বড় সংগ্রহশালা। এখানেই ভাষা আন্দোলন হয়েছিল, এখানেই প্রথম পতাকা উত্তোলন হয়েছিল।
 
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা নির্মাণ করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ জাদুঘর আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইতিহাস চর্চায় উৎসাহিত করবে এবং গবেষণায় উদ্দীপনা যোগাবে।
 
এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ভাষা শহীদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে বর্তমান সরকার দেশের নানা স্থানে স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
 
তিনি শহীদদের আর্দশ ধারণ করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
 
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মহান স্বাধীনতা ও ভাষা আন্দোলনে শাহাদৎ বরণকারীদের তালিকা সম্পন্ন করার জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম।

এসময় শহীদ আবুল বরকতের পরিচিতি তুলে ধরেন জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান।
 
প্রসঙ্গত, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ৩ অক্টোবর এ জাদুঘরের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০০৯ সালের ১৬ জুনে তা শেষ হয়। ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা নির্মাণে ৬৮ লাখ ৫ হাজার ৩১৫ টাকা ব্যয় হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ৩ বছর পর এটি উদ্বোধন কারা হয়েছে।
 
উল্লেখ্য, শহীদ আবুল বরকত ১৯২৭ সালের ১৬ জুন ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি তালিবপুর হাইস্কুল থেকে মেট্রিক এবং ১৯৪৭ সালে বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন।

দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এ বিভাগ থেকে ১৯৫১ সালে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৫২ সালে স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে তিনি মহান ভাষা আন্দোলনে শরিক হন এবং ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে পাক বাহিনীর গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে রাতে শাহাদত বরণ করেন। সে রাতেই তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

২০০০ সালে তিনি মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১২

সম্পাদনায়: ওবায়দুল্লাহ সনি, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।