ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

অনুমতিবিহীন ক্লাস-কনসালটেন্সি করার অভিযোগ ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২২
অনুমতিবিহীন ক্লাস-কনসালটেন্সি করার অভিযোগ ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন শিক্ষকদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স নেওয়া কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু অনুমতিবিহীনভাবে বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও বেসরকারি সংস্থায় কনসালটেন্সি করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চার শিক্ষককের বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিভাগটির অধ্যাপক ড. একেএম রেজাউল করিম চার শিক্ষককের অনিয়মের তথ্যের বিভিন্ন প্রমাণসহ গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে লিখিত চিঠি দিয়েছেন। যার অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য (প্রশাসন ও শিক্ষা), কোষাধ্যক্ষ ও সকল সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। যার একটি কপি বাংলানিউজের হাতেও এসেছে।

যে চার জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন-বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন, সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান, সহকারী অধ্যাপক সোহেল রানা ও সেলিম হোসেন। অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামাল উদ্দীন বুয়েট, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি প্রফেশনালস বিভিন্ন সময় অনুমতি ছাড়া ক্লাস নিয়েছেন। সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান বুয়েট ও আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে কোর্স নিয়েছেন। সহকারী অধ্যাপক সোহেল রানা সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি কোর্স নিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনুমতিবিহীনভাবে পাঠদান করা ছাড়াও শেখ বোরহান উদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজে অনুমতিবিহীনভাবে কালীন শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করছেন গত প্রায় ২০ বছর ধরে।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পড়ানোর জন্য কখনই অনুমতি নেননি। বিষয়টি সবার নজরে আসায় তিনি ৫ জুলাই বিভাগীয় সিঅ্যান্ডডি সভায় শেখ বোরহান উদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজে পড়ানোর অনুমতির জন্য আবেদনপত্র উপস্থাপন করেন এবং উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তা অনুমোদনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ তার আবেদন অনুমোদন না করলেও তিনি বিধি লঙ্ঘন করে ওই কলেজে পাঠদান করে যাচ্ছেন। বর্তমান তিনি অনুমতিবিহীনভাবে Psychometrics-এর ওপর Online Couching ব্যবসাও শুরু করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিধি মোতাবেক একই সঙ্গে মাত্র ২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করা যায়। কিন্তু, মো. সেলিম হোসেন কৌশলে বিধি লঙ্ঘন করে ৩টি বিভাগে (অর্থনীতি, ভাষাবিজ্ঞান ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট) খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করেছেন। বর্তমান তিনি ২টি বিভাগে (অর্থনীতি ও ভাষাবিজ্ঞান) অনুমতি নিয়ে পাঠদান করেলও তিনি অনুমতিবিহীনভাবে Enroute International Ltd. এ কনসালটেন্সি করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিধি মোতাবেক কনসালটেন্সি থেকে আয়কৃত অর্থের অংশ বিশেষ বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলে জমা দিতে হয়। কিন্তু, উক্ত শিক্ষক অনুমতিবিহীনভাবে কনসালটেন্সি করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে ন্যায্য পাওনা থেকে দিচ্ছেন না।

ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সৈযদ তানভীর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি অনুমতি নিয়েই বুয়েটে পাঠদান করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যাক্সও দিয়েছি। সর্বশেষ বুয়েটে পড়ানোর বিষয়টি বুয়েট কর্তৃপক্ষ অফিসিয়ালি দিতে দেরি করায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন জমা দিইনি। বুয়েট থেকে চিঠি পাওয়ার পর বিভাগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক কামাল উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, এটি ফালতু অভিযোগ।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২২
এসকেবি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।