ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘হলে থাকতে হলে গালি খেয়েই থাকতে হবে’

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
‘হলে থাকতে হলে গালি খেয়েই থাকতে হবে’ হলে শিক্ষার্থীদের হট্টগোল।

ইবি: ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সিনিয়র ও জুনিয়র কয়েক শিক্ষার্থীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের রড, লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।

 

শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের সিনিয়র দুই আবাসিক শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন হলের জুনিয়র দুই শিক্ষার্থীকে শাসিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় জুনিয়র দুই শিক্ষার্থীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং ‘হলে থাকতে হলে গালি খেয়েই থাকতে হবে’ বলে সিনিয়র দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে ভুক্তভোগীরা।

অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আবদুল্লাহ আল সাবা হিমু এবং ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তানভীর হোসেন রানা। তারা শাখা ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল সোহাগের অনুসারী।

ভূক্তভোগীরা হলেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ফয়সাল আহমেদ ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তামজিদ হায়দার জিত। তারা উভয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগ নেতা ফজলে রাব্বি গ্রুপের অনুসারী।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রাতে জিত ও ফয়সাল সাদ্দাম হলের পাশে ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু হলের দুই শিক্ষার্থী সেখানে খেলতে যায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হিমুর নির্দেশেই ওই দুই শিক্ষার্থী সেখানে খেলতে যায়। পাঁচ গেম খেলার পর ফয়সাল ও জিত দুই শিক্ষার্থীকে চলে যেতে বলেন।

পরে সেদিন রাতে বঙ্গবন্ধু হলে প্রথম বর্ষের ব্যাচ’ডে উদযাপনের মিটিং হয়। এতে প্রতি হল ও বিভাগের প্রথম বর্ষের ৫ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব করে। এসময় সেখানে হিমু, রানাসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মিটিংয়ের একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থীরা কেন সাদ্দাম হোসেন হলে খেলতে আসবে এ নিয়ে কথা তোলেন জিত। এতে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এর সূত্র ধরে, হিমু ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীকে শেখ রাসেল হলের সামনে ডেকে গালিগালাজ করে হল থেকে নেমে যাওয়ার নির্দেশ দেন বলে জানান তারা। এসময় হিমু ও রানা তাদের ‘হলে থাকতে হলে গালি খেয়েই থাকতে হবে’ বলেছে বলেও অভিযোগ ভূক্তভোগীদের।

ফয়সাল ও জিত হলে এসে বিষয়টি সিনিয়রদের জানান। এসময় হলে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে অনাকাঙ্ক্ষিত গোলযোগ ঠেকাতে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা হল গেট আটকে সেখানে অবস্থান নেন। এর মধ্যে ফয়সাল ও জিত জামাকাপড় নিয়ে হল থেকে নেমে যেতে চাইলে বন্ধুরা তাদের আটকান।

পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফয়সাল ও জিতের বন্ধুরা হলের সামনে রড, লাঠিসোটা নিয়ে জড়ো হতে থাকে। সংঘবদ্ধ হয়ে হিমুকে মারতে উদ্যত হলে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাদের আটকান। এসময় জিত ও ফয়সালের বন্ধুরা হল গেট আটকানো দেখে দেয়াল টপকে হিমুকে মারতে যান। পরে ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খান ও অনিকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে হিমু বলেন, ‘আমি কাউকে খেলতে পাঠাইনি। তাদের গালিগালাজও করিনি। হল থেকে নেমেও যেতে বলিনি। ওই দুইজনের আচরণ খারাপ ছিল। তাই তাদের ডেকে কথা বলেছি। ’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমি মাত্রই শুনেছি, কাল ক্যাম্পাসে গিয়ে উভয়দের ডেকে কথা বলবো। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।