ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘অর্থ আত্মসাৎ’, ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২১
‘অর্থ আত্মসাৎ’, ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি ছবি: শাকিল আহমেদ 

ঢাকা: মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা অমান্য করে করোনাকালে টিউশন ফি ছাড়াও অন্য ফি আদায়, নিয়োগ বা ভর্তি পরীক্ষায় রুম ভাড়ার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভিকারুননিসার সাধারণ অভিভাবকরা। এ সময় তারা অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করেন।

 

বুধবার (১৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষে এসব অভিযোগ করেন আনিসুর রহমান আনিস।  

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর টিউশন ফি ছাড়া কোনো ফি ধার্য না করার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা আধিদপ্তর। এছাড়া ২০২০ সালে যাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়েছে, তা ফেরত দিতে বা পরবর্তী বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে। অথচ এই অধ্যক্ষ তা দেননি। বরং ২০২১ সালের তিন হাজার টাকা করে সেশন চার্জ আদায় করেছে সরকারি আদেশ অমান্য করে। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে।

প্রকৃতপক্ষে যেসব শিক্ষার্থীরা ফুল ও হাফ ফ্রি পাওয়ার দাবিদার, তাদের বঞ্চিত করে অধ্যক্ষের পছন্দের শিক্ষার্থীদের এই সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বলা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বরাবর বেশ কিছু যৌক্তিক ফুল ফ্রি/হাফ ফ্রি আবেদন করা হলে অধ্যক্ষ তা আমলে না নিয়ে তাদের পরিচিত শিক্ষার্থীদের হাফ ফ্রি/ফুল ফ্রি করে। প্রকৃত আবেদনকারীরা দিনের পর দিন বিদ্যালয়ে ঘুরেও অধ্যক্ষের সাক্ষাৎ পায়নি।

বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতি শুক্র ও শনিবার কর্মচারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী/নিয়োগ পরীক্ষা উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করা হচ্ছে। এর সিংহভাগ কামরুন নাহার আত্মসাৎ করছেন। এমনকি প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে কোনো টাকা জমা দেন না। এ সমস্ত নির্বাচনী পরীক্ষায় শিক্ষক, পরিদর্শক ও কর্মচারী যথাসম্ভব কম সংখ্যায় নিয়োগ করতে বাধ্য করেন এবং তাদের কম টাকা দিয়ে বিরাট অঙ্কের সৃষ্ট উদ্বৃত্ত টাকা তিনি নিজে আত্মসাৎ করেন। এর পরিমাণ পরীক্ষা প্রতি প্রায় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, অধ্যক্ষের এই আত্মসাতের ব্যাপারে সহায়তা করছেন অবসরে যাওয়া অধ্যক্ষের পিএ দিলরুবা খাতুন। অবসরে যাওয়া এই পিএ বিনা বেতনে প্রতিদিন অফিস কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন শুধুমাত্র অধ্যক্ষের সব অনৈতিক/অনিয়ম কার্যকলাপ গোপন ও আড়াল রাখার জন্য।

এছাড়া ধর্ম অবমাননা করায় স্কুলের শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র পালকে হাইকোর্টের আদেশে অপসারণ করা হলেও তাকে স্বপদে বহাল রেখেছেন অধ্যক্ষ। এক শিক্ষক দুই পদে থেকে বেতন-ভাতাদি উত্তোল করা, অভিভাবকদের জন্য গাড়ি পার্কিংয়ে আদায়কৃত টাকার সঠিক হিসেব না থাকায় সেটার সঠিক ব্যবহার না করা এবং অভিভাবকদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা না রাখার মতো অভিযোগও তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের অপসারণ দাবি করেন অভিভাবকরা। কলেজেরে সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে থেকে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।  

এ বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার বলেন, এসব অভিযোগ সবগুলোই পুরোনো, মিথ্যা, বানোয়াট এবং ষড়যন্ত্রমূলক। একটি গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করতে পারছে না বলেই এ ধরনের অভিযোগ সামনে আনছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২১
এইচএমএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।