ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বেরোবিতে অবহেলায় পরীক্ষা দেয়া হলো না অসুস্থ ৩ ভর্তিচ্ছুর

বেরোবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
বেরোবিতে অবহেলায় পরীক্ষা দেয়া হলো না অসুস্থ ৩ ভর্তিচ্ছুর

বেরোবি, (রংপুর): রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) চলমান ভর্তি পরীক্ষায় মেডিকেল সেন্টারের অব্যবস্থাপনার কারণে প্রাথমিক চিকিৎসাও পাননি ভর্তিচ্ছু তিন শিক্ষার্থী। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে এলেও তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের সহযোগিতায় তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

রোববার (১০ নভেম্বর) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তিতে ‘এ’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত হন ওই তিন শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ‘এ’ ইউনিটের (কলা অনুষদ) দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা নেওয়া হয়।

পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা আগে নরসিংদীর ঘোড়াশালের আফসানা আকতার নামের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ মেডিক্যাল টিম থাকার কথা থাকলেও তাদের উদাসীনতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক সৌম্য সরকার তাকে কোলে করে মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যান। কিন্তু মেডিক্যাল সেন্টারে কোনো চিকিৎসককে তখন পাওয়া যায়নি। পরে এক চিকিৎসক মেডিক্যাল সেন্টারে এলেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সরঞ্জামাদি না থাকায় অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। পরে সাংবাদিকরাই রমেক হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন আফসানাকে।  

এর কিছুক্ষণ পর নীলফামারী থেকে আসা পরীক্ষার্থী ইয়াসমিন ও পাবনা থেকে আসা রোকসানা অসুস্থ হলে কোনো স্ট্রেচার বা ব্যবস্থা না থাকায় কোলে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কাউট, বিএনসিসি ও সাংবাদিক সমিতির সেক্রেটারি কোলে করে তাদের মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যান। পরে এ দু’জনকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা রমেক হাসপাতালে নিয়ে যান।

তিন শিক্ষার্থীকে সাংবাদিকরা রমেকে নিলেও তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারী যাননি। এমনকি তাদের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও দেখা যায়নি। মেডিক্যাল টিম থাকলেও তাদের বেশিরভাগ পরীক্ষার হলে ডিউটিতে ছিলেন বলে জানা যায়।  

সম্প্রতি ডিজিটাল ও অত্যাধুনিক মেডিকেল সেন্টার ঘটা করে উদ্বোধন করলেও ভর্তি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক কোনো সেবা দিতে না পারার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেডিক্যাল সেন্টারকে ডিজিটাল ঘোষণা করলেও সেখানে কোনো প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সরঞ্জামাদি নেই। পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা বাকি থাকতেও শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা পাননি। প্রাথমিক চিকিৎসা পেলে ভর্তিচ্ছুরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারকে ডিজিটাল ঘোষণা করেও সে মানের কোনো সুবিধা না থাকার বিষয়ে প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) আতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মেডিক্যাল টিম আমাদের আছে, কিন্তু কেন এমন হলো বুঝতে পারছি না। হয়তো দায়িত্বে অবহেলা করেছে তারা। বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, এত বড় আয়োজনে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে যায়। যেহেতু আমাদের লোকবল সংকট, তাই মেডিক্যাল সেন্টারের কয়েকজনকে পরীক্ষার দায়িত্বে রাখা হয়েছে। বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

ওই তিন শিক্ষার্থী পরবর্তীকালে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন কি-না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপাচার্য জানান, এ বিষয়ে আজ মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।