ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ছাত্রী শ্লীলতাহানি: পাবিপ্রবিতে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
ছাত্রী শ্লীলতাহানি: পাবিপ্রবিতে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক

পাবনা: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে দেরি করায় অযোগ্য ব্যর্থ ও অদক্ষতার অভিযোগ এনে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে তারা ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি শুরু করে।  

এদিকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভোটগ্রহণের পূর্ব নির্ধারিত সময় থাকলেও নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন।

পাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০১৯ এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. রাশেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনের জন্য সব কার্যক্রম ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। সকাল ১০টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু করার কথা থাকলেও সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারিনি।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ম্যাসে ঢুকে এক বখাটে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ দাবিতে তারা একটি আল্টিমেটাম দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টিকে আমলে না নেওয়ায় হয়তো শিক্ষার্থীরা বুধবার থেকে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়ে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনসহ সব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।  

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা নির্বাচন কমিশন শিক্ষক সমিতির নির্বাচনটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছি। পরবর্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়ে নোটিশ করবেন বলেও জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ নীল দলের সভাপতি প্রার্থী ড. হাসিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর সমর্থিত প্যানেলের পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন কিনা আমাদের বোধগম্য নয়। নির্বাচনের শুরু থেকেই নির্বাচনে ভাইস চ্যান্সেলর তার অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্নভাবে অপতৎপরতা চালাতে থাকেন।

ভিসির বিরুদ্ধে ভোটারদের বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করার অভিযোগ করেন তিনি।

তবে গত কয়েকদিন ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ দাবিতে বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচি পালন করে আসছে।

নীল দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে ব্যর্থ। তারা আমাদের সুনিশ্চিত বিজয় দেখে এ কাজটি করেছেন। দ্রুত শিক্ষক সিমতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু করার দাবি জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বাবু বাংলানিউজকে বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি (শুক্রবার) সন্ধ্যায় এ বখাটে ‘নেশাগ্রস্থ’ অবস্থায় শহরের রাধানগর মহল্লার একটি ছাত্রীনিবাসে ঢুকে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। এসময় ওই বখাটে অন্য ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে। ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত বখাটের চাচার বাড়িতে বসে সমঝোতা করার চেষ্টা করে মিষ্টি খেয়ে চলে আসেন। বিষয়টি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানা জানি হলে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।  

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতারা পুলিশ প্রশাসনকে চাপ দেওয়ার পর ওই ঘটনায় রাধানগর ডিগ্রি বটতলা এলাকার আমিরুল ইসলামের ছেলে অভিযুক্ত আসিফ ইকবাল চিন্ময়কে (২৭) পুলিশ রাতেই গ্রেফতার করেন। এ সমস্ত কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে।  

এখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও জানান ছাত্রলীগের এ নেতা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. রোস্তম আলী ফরাজী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনের বিষয়টি আমার জানা নেই। আর এখানে আমার সমর্থিত কোনো প্যানেলও নেই। নীল দল মনগড়া আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল বডিকে অযোগ্য আখ্যায়িত করে তাদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছে।

আসলে কাদের ইশারায় কেন তারা এ কাজ করছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান ভাইস চ্যান্সেলর রোস্তম আলী ফরাজী।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।