ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

অত্যাধুনিক মেশিনে সেবা পাচ্ছেন রাবি শিক্ষার্থীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
অত্যাধুনিক মেশিনে সেবা পাচ্ছেন রাবি শিক্ষার্থীরা অত্যাধুনিক মেশিনে সেবা পাচ্ছেন রাবি শিক্ষার্থীরা। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মেডিকেল সেন্টারে ঢুকলেই সামনে একটি ছোট ঘরে অটোমেশন মেশিন দেখা যাবে। সেখানে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মার্ট আইডি কার্ড পাঞ্চ করছেন।

প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার পর, যে রোগের চিকিৎসক দেখাতে চান সে বাটনে চাপ দিলেই টোকেন বেরিয়ে আসছে। টোকেনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম, নির্ধারিত কক্ষ ও শিক্ষার্থীর পরিচয় উল্লেখ রয়েছে।

টোকেন নিয়ে রোগী সরাসরি যাচ্ছেন চিকিৎসকের কক্ষে।  

চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার পর যাচ্ছেন মেডিকেল সেন্টারের ফার্মেসিতে। চিকিৎসক ততক্ষণে তার প্রেসক্রিপশন কম্পিউটারে ফার্মেসিতে পাঠিয়েছেন। ফার্মাসিস্ট সার্ভারে প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ দিচ্ছেন। কোনো মেডিকেল কার্ডের ঝামেলা নেই।

এদিক-সেদিক ছুটোছুটি কিংবা তৃতীয় কারো সঙ্গে কথা বলার দরকার নেই। নেই সিরিয়াল দেওয়ার ঝক্কি। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে অনেকটা এভাবেই চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন রাবির শিক্ষার্থীরা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রোগের বৈচিত্রতা যেমন বাড়ছে। তেমনি নিবারণের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানেরও আধুনিকায়ন ঘটছে। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রমান্বয়ে আধুনিক করা হচ্ছে রাবির মেডিকেল সেন্টার। প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে চলমান এটিকে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাকেন্দ্রে পরিণত করার কার্যক্রম শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। অত্যাধুনিক মেশিনে সেবা পাচ্ছেন রাবি শিক্ষার্থীরা।  ছবি: বাংলানিউজইতোমধ্যে ডেন্টাল, প্যাথলজি, ফিজিওথেরাপি ইউনিটে বিভিন্ন অত্যাধুনিক যন্ত্র যোগ করা হয়েছে। অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্র কেনা হয়েছে।

সরেজিমনে দেখা যায়, মেডিকেল সেন্টারের বিভিন্ন কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করাসহ বিভিন্ন আধুনিক সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।  

মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান চিকিৎসক ডা. মাশিহুল আলম হোসাইন বাংলানিউজকে জানান, চিকিৎসককেন্দ্রের পাশে একটি পুরনো ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি ভবনটি সংস্কার করে কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট হিসেবে খোলা হয়েছে। এখানে অত্যাধুনিক ডেন্টাল ইউনিট, প্যাথলজি ও আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।  অত্যাধুনিক মেশিনে সেবা পাচ্ছেন রাবি শিক্ষার্থীরা।  ছবি: বাংলানিউজএক্স-রে ইউনিটে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন (৫০০ এমএ) এবং ডিজিটাল প্লান্টের সঙ্গে এক্স-রে মেশিন যুক্ত করা হয়েছে। সেন্টারে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে অত্যাধুনিক ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও ফিজিওথেরাপি ইউনিট।  ফিজিওথেরাপি ইউনিটে এসডাব্লিউডি, ইউএসটি, ইলেক্ট্রিক ফ্রাকশন, টেনস ও ওয়াক্স থেরাপিসহ বেশ কয়েকটি সেবা পাচ্ছেন রোগীরা। প্যাথলজি ইউনিটে আগে সীমিত পরিসরে রোগের পরীক্ষা হলেও বর্তমানে এর সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। প্যাথলজিতে এইচবিওয়ানসি, লিপিড প্রোফাইল টেস্টসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হচ্ছে। মেডিকেল সেন্টারের জন্য কার্ডিয়াক সুবিধা সম্পন্ন একটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছে।  

তিনি আরও জানান, সার্বক্ষণিক দু’টি অ্যাম্বুলেন্স রোগীদের আনা-নেওয়া কাজ করছে। আউটডোর-ইনডোরে পূর্ণাঙ্গ ইমার্জেন্সি ইউনিট করা হয়েছে। এছাড়া রোগীদের বিনামূল্যের জন্য রয়েছে প্রায় ৮০ ধরনের ওষুধ ও ইঞ্জেকশন।  

রাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমদিকে মেডিকেল সেন্টারটিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হতো। কিন্তু এখন ডেন্টাল, প্যাথলজি, ফিজিওথেরাপির মতো চিকিৎসার আধুনিক সরঞ্জাম থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আমরা কাঙ্ক্ষিত অনেক সেবাই পাচ্ছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা কেন্দ্র ।  ছবি: বাংলানিউজ

মেডিকেল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক ডা. তবিবুর রহমান শেখ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বর্তমান সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় মেডিকেল সেন্টারটিকে অত্যাধুনিক কনসালটেশন ও ডায়গনস্টিক সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। অটোমেশনের আওতায় সব শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সংক্রান্ত সব রেকর্ড থাকছে। চিকিৎসকের অ্যাটেনডেন্স, কী পরিমাণ ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, সব রেকর্ড অটোমেশন মেশিনে থাকছে। আধুনকিতার ছোঁয়ায় বর্তমানে এখানকার বিভিন্ন ইউনিটের সক্ষমতা বেড়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের ভিড় লেগে থাকে।

ডা.তবিবুর রহমান শেখ আরও জানান, আউটডোরে শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তুলতে একটি অর্গানোগ্রাম প্রস্তুত করা হয়েছে। এর আওতায় নয়জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ইমার্জেন্সির জন্য ছয়জন মেডিকেল অফিসার, ছয়জন টেকনোলজিস্ট ও চারজন নার্স নিয়োগ করা হবে। এটি দেড়বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়ে ইউজিসির অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।  

ফলে অর্গানোগ্রাম অনুমোদন পেলে সেন্টারের সক্ষমতা আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।