ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শেকৃবি’র ভর্তি পরীক্ষায় অভিযুক্তদের ধরতে উদাসীন প্রশাসন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৭
শেকৃবি’র ভর্তি পরীক্ষায় অভিযুক্তদের ধরতে উদাসীন প্রশাসন শেকৃবি

ঢাকা: শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ভর্তি পরীক্ষায় পাঁচটি জালিয়াতি চক্রের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে র‌্যাব-২। র‌্যাবের তদন্তে এসব জালিয়াতি চক্রের প্রধান পাঁচ হোতা চিহ্নিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতায় অভিযুক্তরা ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে। 

ভর্তি পরীক্ষায় ৯ ভর্তিচ্ছুকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস সহ আটক করে র‌্যাব-২ এ সোর্পদ করে দায় সেরেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। চিহ্নিত অপরাধীদের ধরতে বা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতেও উদাসীনতা দেখাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

 

র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চিহ্নিত অভিযুক্তদের ধরতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনুমতি দিলেও অভিযানকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে না চাওয়ায় র‌্যাব অভিযান থেকে বিরত থাকে।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেকেন্দার আলী বাংলনিউজকে বলেন, আমরা র‌্যাবকে অনুমতি দিলেও তারা আবাসিক হলে অভিযান চালায় নি। তবে, এখন যদি র‌্যাব অভিযান করতে চায়, আমরা তাদের সর্বাত্মক সহোযোগিতা করব।  

যদি র‌্যাব অভিযান না চালায় এমন প্রশ্নে উপ-উপাচার্য বলেন, দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে আমরা তাদের সমূলে উৎপাটন করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।

অপরদিকে, র‌্যাব-২ এর স্পেসালাইজ্ড কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে র‌্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত এই পাঁচ ছাত্র আমাদের নজরে আছে।  

র‌্যাব-২ সূত্র জানায়, আটক হওয়া ৯ ভর্তিচ্ছুকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জালিয়াতির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রের সরাসরি সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের, দুইজন দ্বিতীয় বর্ষের ও বাকি দুইজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।  

বাংলানিউজের অনুসন্ধানে একটি ফোনালাপের অডিও রেকর্ডিং পাওয়া গেছে। যাতে  বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সায়েন্স ও ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের প্রথম বর্ষের শাজাহান নামে এক শিক্ষার্থীকে ভর্তিচ্ছু ১৩ শিক্ষার্থীর একটি গ্রুপের সঙ্গে ডিভাইসের মাধ্যমে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলতে শোনা যায়। ২ লাখ ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহের চুক্তি হয় ওই ফোনালাপে।  

শাজাহানের একাধিক সহপাঠি জানান, জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত এ ছাত্র প্রথম সেমিস্টারে বেশ কয়েকটি কোর্সে ফেল করায় আবারও প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস না করে ফার্মগেটে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং এ ক্লাস নেয়। এছাড়া সে রাতে আবাসিক হলে না থেকে র্ফামগেটে মেসে থাকে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটককৃত ৯ জনকে র‌্যাবের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। র‌্যাবের তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের কেউ যদি জড়িত থাকে, তাহলে তাদের রিরুদ্ধে র‌্যাবকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।    

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ০৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস সহ ৯ জন ভর্তিচ্ছুকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে এদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগারগাঁও র‌্যাব-২ এর কাছে সোপর্দ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৬
পিসি/ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।