ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

১৭০ মেধাবীকে স্বর্ণপদক তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী

‘বুড়ো হয়ে গেছি সন্দেহ নেই, তবে পারি!’

বিশেষ সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬
‘বুড়ো হয়ে গেছি সন্দেহ নেই, তবে পারি!’ প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক বিজয়ী গলায় পদক পরিয়ে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ ছবি: পিএমও

ঢাকা: ‘বুড়ো হয়ে গেছি সন্দেহ নেই, তবে পারি। ’ দেশের স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত মেধাবীদের গলায় পদক পরিয়ে দিয়ে, তাদের অভিনন্দন জানাতে গিয়ে একথাটিই বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।



বুধবার (০৬ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মেঘনা হলে কৃতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল মেধাবীদের স্বর্ণপদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।   বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উদ্যোগে এ স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এ অনুষ্ঠানে ২০১১ সালের ৭৪ জন এবং ২০১২ সালের ৯২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মেধাবী শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ২০০৬ সাল থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ দিয়ে আসছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ে প্রতিটি অনুষদে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তরা এই পদকের জন্য মনোনীত হন।

এসময় বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী পেছনের কথা স্মরণ করে বলেন, প্রথম যখন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, তখন বলা হয়েছিলো ৫ জন বা ১০ জনকে পদক তুলে দেওয়া হবে। সবাইকে দেওয়ার সময় নেই। সাধারণত সেটাই করা হয়। আসলে অন্য কাজ থাকে। কিন্তু ইউজিসি’র চেয়ারম্যান সাহেব যখন আমাকে দাওয়াত দিতে গেলেন, তখন জিজ্ঞাসা করলেন, আমি সবাইকে পদক তুলে দিতে পারবো কি না। তখন আমি বললাম, বুড়ো হয়ে গেছি সন্দেহ নেই। বার বার হাত উঠিয়ে পদকগুলো দেওয়া এই বয়সে একটু কষ্টকরও বটে। বলতে পারি না, দিতে পারবো কি না, তবুও আমি চেষ্টা করবো। আজ আমার সত্যিই ভালো লাগলো, শিক্ষার্থীদের যারা আজ এখানে উপস্থিত তাদের সবাইকে আমি পদক তুলে দিতে পারলাম।

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে করতালির ঝড় বয়ে যায় গোটা কক্ষে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বললেন, আজ আরও একটি বিষয় দেখে ভালো লাগলো, যখন পদক তুলে দিতে গেলাম, যদিও স্বজাতি প্রীতি হয়ে যাবে তাও বলতে বাধ্য, কারণ মিলিয়েনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলেও এ বিষয়টি খুব জোরেশোরে উল্লেখ করা হয়েছিলো- অর্থাৎ জেন্ডার সমতা। আমি দেখছি ২০১১ তে আমরা যতজনকে গোল্ড মেডাল দেই তাদের প্রায় ৩৭ ভাগ মেয়ে। ২০১২ সালে তার অংশ ৪০.২১ ভাগ। প্রতিবছর মেয়েদের সংখ্যা বেড়ে অনেকটা সমতায় চলে এসেছে। তবে আমি এটাই বলবো আমাদের ছেলেরা ও মেয়েরা উভয়ই যথেষ্ট মেধাবী। তারা মেধা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে এটাই সবচেয়ে বড় কথা। আর শিক্ষাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান।

শেখ হাসিনা জাতির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। গত সেপ্টেম্বরে ৬৯’এ পা দিয়েছেন ‌‘দেশরত্ন’ খ্যাত শেখ হাসিনা। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় তার জন্ম। বাল্যশিক্ষা নেন সেখানেই। ১৯৫৬ সালে তিনি ঢাকার টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। রাজনীতিতে সক্রিয় হন ১৯৮১ সালে। ১৯৯৬ সালে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৯ সালে দ্বিতীয় ও ২০১৪ সালে তৃতীয় মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে দেশের শিক্ষাখাতে অগ্রগতির নানা দিকও ওই বক্তৃতায় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময় ১৩১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।