ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

পেট্রোল বোমাও আটকাতে পারেনি ওদের

ঊর্মি মাহবুব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৫
পেট্রোল বোমাও আটকাতে পারেনি ওদের

ঢাকা: যখনই ছেলেকে পরীক্ষা দেওয়াতে তাকে নিয়ে বাসা থেকে বের হতাম, মনে হতো, এই বুঝি পেট্রোল বোমা মারল! কী যে আতঙ্কে থাকতে হতো। আজ ছেলের ভালো ফলাফলে মনে হলো, ওপরওয়ালা মুখ তলে তাকিয়েছেন।

ছেলের এসএসসির ফলাফলের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে এমনটাই বলছিলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী অভি হাসানের মা রুবাইয়া খাতুন।

শনিবার (৩০ মে) দুপুর দুপুর ১টা ৮ মিনিটে শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।

ফলাফল প্রকাশের পর পরীক্ষা চলাকালে আতঙ্কের কথা উল্লেখ করলেন রুবাইয়া খাতুন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, শুধু পরীক্ষা দেওয়ার সময়ই নয়, সন্ধ্যায় ছেলেকে নিয়ে যেতে হতো প্রাইভেটে। প্রতি মুহূর্ত আতঙ্কে কেটেছে। ওর বাবা সন্ধ্যা হলেই বারবার ফোন দিতেন। বলতেন, তোমরা ঠিক আছোতো। কী যে দিন কেটেছে!

স্কুলটির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ছাত্র নাহিয়ান হাবিব বাংলানিউজকে বলেছে, আমার বাবা-মা দু’জনেই চাকরি করেন। পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধ ছিলো। যেদিন প্রাইভেট পড়া থাকতো, সেদিন বাবা আগে অফিস থেকে চলে আসতেন, কখনো বা মা।

বাসের আগুনে পুড়ে মানুষ মারা গেছেন দেখে আমারো ভয় লাগতো। আজ জিপিএ-৫ পেয়ে সেসব কষ্ট আর কিছুই মনে হচ্ছে না।

শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এমনটাই মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম।

দুপুর সাড়ে বারোটায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাকে এ তথ্য জানানো হয় বলেও জানান ড শাহান আরা বেগম।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এবারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। শুক্রবার-শনিবার ছাড়াতো কোনা পরীক্ষাই হয়নি। রুটিন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করতে হয়েছে। ফলে বিভ্রান্তিতে ছিলো শিক্ষার্থীরা। এতো কিছুর পরও শিক্ষক, অভিভাবক শিক্ষার্থীদের সহায়তায় আজকের এই ফলাফলে আমরা সত্যি আনন্দিত।

প্রতিষ্ঠানটি থেকে চলতি বছর ১৫৮১ জন শিক্ষার্থী এসএসসির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে ছেলে ৭৫ শতাংশ ও মেয়ে ২৫ শতাংশ।

২০১৪ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল দ্বিতীয় স্থানে ছিলো।
এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ৮৭. ০৪ শতাংশ। মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৯০. ০২ শতাংশ। আর কারিগরিতে পাসের হার ৮৩.০১ শতাংশ।

মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ১১ হাজার ৯০১ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৪২ হাজার ২৭৬ জন।

এ বছর মোট ১৪ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১২ লাখ ৮২ হাজার ৬১৮ জন। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৯৫টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী শতভাগ পাস করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৫
ইউএম/এএসআর

** ঢাকা বোর্ডে তৃতীয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।