ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নারীদের সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার আহবান অর্থমন্ত্রীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৪
নারীদের সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার আহবান অর্থমন্ত্রীর ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: নারীদের কোনো ধরনের দ্বিধাবোধ ছাড়াই সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর এতে সরকারের সর্বাত্বক সহযোগিতাও থাকবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার পুরুষের মতো নারীর সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।



শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি নারীদের প্রতি এ আহবান জানান।

নারীর ক্ষমতায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার প্রগতিশীল সরকার। প্রতি বছর মহিলাদের উন্নয়নের জন্য বাজেটে ১শ’ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেওয়া হলেও এ পর্যন্ত একবারও তা পুরোপুরি ব্যবহার হয়নি।
 
এ বছরেও এ খাতে সবচেয়ে বেশি ৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও তা পুরোপুরি ব্যবহৃত হবে কি না তিনি এখনও নিশ্চিত নন বলে উল্লেখ করেন।

বক্তব্যে তিনি সিলেটের নারী শিক্ষার শুরুর কথা নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার নারী জাগরণের আগে থেকেই এ অঞ্চলে নারীরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। ফলে প্রচলিতভাবে নারী শিক্ষায় সিলেট অনেক আগে থেকেই এগিয়ে ছিলো। এ ঐতিহ্য বহাল থাকবে।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নজরুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন জাতীয় কমিশনার জেবা রশীদ চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, কেয়া চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল হাসান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ক্রেস্ট এবং ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

১৯৩৯ সালে বিদ্যোৎসাহী জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ন চৌধুরীর জিন্দাবাজারস্থ বাসভবনে সিলেটে একটি মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনি ছাড়াও তৎকালীন মন্ত্রী বসন্ত কুমার দাস, মন্ত্রী বৈদ্যনাথ মুখার্জি, রায় বাহাদুর ধর্মদাস দত্ত এবং অ্যাডভোকেট আবু আহমদ আবদুল হাফিজ উপস্থিত ছিলেন।

এ সভায়ই সিলেট মহিলা কলেজের ভিত্তি রচিত হয়। অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ন চৌধুরী নিজে। ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি কলেজ হিসেবে পরিচালিত হয়।

১৯৪৫ সালের ১ ডিসেম্বর সিলেট মহিলা কলেজ সরকারিকরণ হয়। কিন্তু শিক্ষার্থী স্বল্পতা দেখিয়ে ১৯৫০ সালে পাকিস্তান সরকার এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে আবার বেসরকারি ঘোষণা করে। তবে ১৯৮০ সালে সরকারি স্বীকৃতি আবার ফিরে আসে।

সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ৭৫ বছর পূর্ণ হলো এবার। তাই আয়োজন করা হয়েছে ৭৫ বছর পূর্তি উৎসবের। গ্রহণ করা হয়েছে ৩ দিনের কর্মসূচি।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে তিনদিনের কর্মসূচি শুরু হয়। জমকালো এ অনুষ্ঠান শুক্রবার বিরতি দিয়ে শনিবার ফের শুরু হয়। সকালে স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। চলে দুপুর অবধি। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিত।

বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত স্মৃতিচারণ, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) উৎসবের শেষ দিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সেমিনার ও কৃতী নারী সম্মাননা অনুষ্ঠান শুরু হবে। এতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন।

ওই দিন সকাল ১১টায় স্মৃতিচারণ, বেলা ২টায় বৃক্ষরোপণ, রক্তদান ও খেলাধুলা ও সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে। রাতেই সমাপনী ঘোষণা করা হবে।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা যোগ দিয়েছেন উৎসবে। বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণ। প্রায় দেড় হাজার অংশগ্রহণকারী নিবন্ধন করেছেন বলে আয়োজকদের সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।