ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ‘ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৪
বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ‘ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’

ঢাকা: অবশেষে নাম চূড়ান্তসহ বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলেই প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ও গবেষণার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুসঙ্গিক কার্যক্রম শুরু হবে।



জাতীয় সংসদে আইনটি পাস হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত গাজীপুরে ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। অনুমোদনের জন্য খুব শিগরিই তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।

২০১০ সালে গাজীপুর সফরে গিয়ে মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে একটি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ওই বছরের মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় আইনের খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সভা করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবিদ-প্রযুক্তিবিদদের মতামত নিয়ে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হেলাল উদ্দিন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে আইনের খসড়া করা হলেও শেষ পর‌্যন্ত ‘ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ, গাজীপুর’ নাম পাবে এই বিশেষায়িত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

শেখ হাসিনা সরকারের গত মেয়াদে নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণার পর বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি সরকারি বা বেসরকারি একটি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে প্রস্তাব করেছিল।

সরকার এই প্রস্তাব গ্রহণ করে সরকারিভাবে ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি স্থাপনের উদ্যোগ নেয় বলে জানান বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রাক্তন সভাপতি মোস্তফা জব্বার।
 
তিনি বলেন, বিশেষায়িত এই ইউনিভার্সিটি শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে এবং জাতীয় জীবনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে অবদান রাখবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হেলাল উদ্দিন বলেন, আইনের খসড়া অনুমোদনের পর অর্থ বরাদ্দে ডিপিপি তৈরি, অবকাঠামো নির্মাণ, উপাচার্য নিয়োগসহ অন্যান্য কাজ শুরু হবে।

ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় পাঠদান এবং তাত্ত্বিক ও প্রয়োগিক বিষয়ের ওপর গবেষণার সুযোগ থাকবে।

খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা ও গবেষণামূলক এই প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনে স্নাতক পর্যায়েও পাঠদানের সুযোগ সৃষ্টি করা যাবে।

বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত ডিজিটাল টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন, অ্যাডভান্সড টেকনোলজি নিয়ে পাঠদান ও গবেষণার সুযোগ পাবেন ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ও গবেষকরা বৃত্তি ও ভাতা প্রাপ্ত হবেন। আর এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে সম্পূর্ণ আবাসিক।

দেশি-বিদেশি শিক্ষক-গবেষকদের আকৃষ্ট করতে উপাচার্য,  উপ-উপাচার্য, শিক্ষক ও গবেষকদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।  

ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষকের সর্বনিম্ন পদ হবে পিএইচডি অথবা সমমান ডিগ্রিধারীর সহকারী অধ্যাপক।

একটি সার্চ কমিটি অভিজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন তিনজন শিক্ষাবিদ নিয়ে উপাচার্য প্যানেল তৈরি করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠাবে।
রাষ্ট্রপতি তাদের মধ্য থেকে একজনকে উপাচার্য নিয়োগ দেবেন।

প্রযুক্তি শিক্ষা-গবেষণার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি মডেল হিসেবে রূপান্তর হবে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব হেলাল উদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।