ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

দলবাজ ছাত্র-শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না: প্রধান উপদেষ্টাকে শিক্ষার্থীরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
দলবাজ ছাত্র-শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না: প্রধান উপদেষ্টাকে শিক্ষার্থীরা রোববার (সেপ্টেম্বর ০৮) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ঢাকা: রাজনৈতিক দলীয় ট্যাগধারী ছাত্র এবং শিক্ষককে ক্যাম্পাসে দেখতে চান না বলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (সেপ্টেম্বর ০৮) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে ড. ইউনূসের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শিক্ষার্থীরা এ কথা বলেন।

মতবিনিময়ে শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন এবং বিভিন্ন দাবি জানান।

রাজনীতিকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসে, ক্লাসে একজন শিক্ষক শুধু শিক্ষক থাকবেন, একজন ছাত্র শুধু ছাত্র থাকবেন। কোনো ট্যাগধারী ছাত্র এবং শিক্ষককে আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না।

যারা বিদেশে উচ্চশিক্ষায় গেছেন তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা এবং দেশে তাদের মেধার মূল্যায়ন করে দেশের কাজে লাগাতে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষার্থীরা।

তারা বলেন, গ্র্যাজুয়েশনের পর বিদেশে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরা দেশে ফিরছে না বলে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং বাড়ছে না। দেশে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব তৈরি হচ্ছে না।

টাকা পাচারের চেয়ে মেধা পাচার বেশি ভয়ানক বলে মন্তব্য করেন একজন শিক্ষার্থী।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে যারা বিভিন্ন সেক্টর কর্মরত আছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।

তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী দোসররা বর্তমানে বিভিন্ন সেক্টরে যারা আছে তাদের আমরা আর দেখতে চাই না। অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

মব জাস্টিস নিয়ন্ত্রণকে এই মুহূর্তে একটি প্রধান কাজ হিসেবে বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।

তারা বলেন, মব জাস্টিস নিয়ন্ত্রণ করা, এই মুহূর্তে প্রধান কাজের একটি। এটা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে যদি সমাজের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়, কোনো কুচক্রী মহল এই দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে আমাদের ভেতরে প্রবেশ করে আমাদের ঐক্য নষ্ট করার চেষ্টা করবে।

সরকারি হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আন্দোলনের সমন্বয়ক ও এক নারী মেডিকেল শিক্ষার্থী বলেন, যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে রোগীদের যাতে হেনস্তা না হতে হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা চাই চিকিৎসা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হোক। যেখানে শুধু চিকিৎসক না, রোগীদেরও সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, সিভিল সার্ভিস, জুডিশিয়ারি সার্ভিসের মতো বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিসের অধীনে সমস্ত মেডিকেল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের এর অধীনে আনা যায় তাহলে অনেক স্বচ্ছতা ও সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানো এবং বিপণন ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। সার-কীটনাশক, কৃষি সরঞ্জামে ভর্তুকি এবং দাম কমাতে হবে।

আগামীতে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে বলেন তারা।

মতবিনিময় সভায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের বিভিন্ন পরামর্শ মনোযোগ দিয়ে শোনেন।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন - আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ফরিদা আখতার, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

আরও পড়ুন>> এই সুযোগ হাতছাড়া হলে বাংলাদেশ আর রাষ্ট্র থাকবে না: ড. ইউনূস

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪
এমইউএম/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।