ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়াই বসছে জাবির সিনেট

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়াই বসছে জাবির সিনেট

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): দীর্ঘ ৩০ বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বন্ধ থাকার ফলে ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০তম সিনেট অধিবেশন।  

শনিবার (২৪ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে ৪০তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

তবে ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া এই সিনেট অধিবেশন ‘অপূর্ণাঙ্গ’ আখ্যা দিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।  

ছাত্র নেতারা জানান, ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদে পাশ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ- ১৯৭৩ অনুযায়ী জাবির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিনেট। সেই সিনেটে অন্যান্য প্রতিনিধির সঙ্গে অধ্যাদেশের ১৯(১) এর (ক) ও ১৯ (২) ধারা মেনে জাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সিনেটে ৫ জন ছাত্র প্রতিনিধির বিষয়টি ৩০ বছরে নিশ্চিত করা হয়নি। দীর্ঘ সময় ছাত্র-প্রতিনিধিদের মনোনীত সদস্য ছাড়াই সিনেটের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেনি।

অন্যদিকে, জাকসু ও হল সংসদ না থাকায় বর্তমানে ক্যাম্পাসে যোগ্য ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড মন্থর গতিতে চলতে বলে অভিযোগ ছাত্রনেতাদের। অ্যাক্ট অনুযায়ী সিনেটের মোট সদস্য ৯২ জন (উপ-উপাচার্য একজন হলে)। তবে এবারের সিনেটে রয়েছেন ৮১ জন সদস্য। বাকি আসনগুলো শূন্য রয়েছে।  

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, সিনেটে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে কথা বলতে পারছি না। ছাত্রপ্রতিনিধি ছাড়া সিনেট অধিবেশন কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রশাসনের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচন দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বাংলানিউজকে বলেন, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নেই ৩০ বছর ধরে। অর্থাৎ ৩০ বছর এ প্রশাসন ছাত্রদের কোনো কথা শোনে না। এটা একটা স্বৈরাচারী মনোভাব। এতে ছাত্ররা অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় এবং সিনেটের আলোচনা প্রশাসনের পক্ষে চলে যায়। এটা শুধু শিক্ষকদের অধিকার রক্ষার একটি সভা। জাকসু নির্বাচন না দিয়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি থেকে বঞ্চিত করছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন করার সুযোগ পাওয়া সত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটা করে না। ছাত্র প্রতিনিধি না থাকলে ছাত্র স্বার্থকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। ছাত্র প্রতিনিধি নাই মানে ছাত্র স্বার্থকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যে সিনেট অধিবেশন বসছে এখানে অধিকাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ সিনেটর। মেয়াদোত্তীর্ণ সিনেটর নিয়ে সিনেট অধিবেশন সম্পূর্ণ অনৈতিক।  

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘জাকসু থেকে ছাত্র প্রতিনিধি নিয়ে আসার ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিক। এক্ষেত্রে সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রয়োজন। ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায় আমাদের পক্ষে এখনই কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। যেহেতু আমি কথা দিয়েছি, সুযোগ বুঝে জাকসু নির্বাচন দেব। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।