ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাণিজ্য ঘাটতি ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়েছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৮
বাণিজ্য ঘাটতি ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়েছে

ঢাকা: আমদানির তুলনায় রফতানি কমে যাওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) আমদানিতে ৮৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয় হলেও রফতানি হয়েছে ৬৭১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের।

এতে বাণিজ্য ঘাটতি ২১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ছিলো ১৭৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৩৪ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
 
রফতানি আয়ের চেয়ে আমদানি ব্যয় যেটুকু বেশি, তার পার্থক্যই বাণিজ্য ঘাটতি। আর চলতি হিসাবের মাধ্যমে দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝানো হয়। আমদানি-রফতানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।  

এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।
 
আমদানি ব্যয় বাড়লে রফতানি আয়ও বাড়ে এটাই অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়ম। কারণ বিদেশ থেকে যেসব কাঁচামাল আমদানি করা হয় তার একটি অংশ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে রফতানি হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এর ব্যতিক্রমই হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
 
ফলে আমদানির নামে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার হচ্ছে এমন আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, আমদানির নামে যদি অর্থপাচার হয় তাহলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক।
 
এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, রফতানির ক্ষেত্রে যেভাবে মূল্যপতন হচ্ছে আমদানির ক্ষেত্রে সেভাবে হচ্ছে না। এতে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম আবারও বেড়েছে। তিন মাসের বেশি সময় ধরে একই থাকার পর প্রতি ডলারে ৫ পয়সা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৩ টাকা ৮০ পয়সা। তিন মাস আগে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের দাম ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সা মূল্য বেধে দেয়।  

এখন তা আরো ৫ পয়সা বেড়েছে। তবে এক রকম ঘোষণা দিয়ে আরেক দামে ডলার বিক্রির অভিযোগ রয়েছে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স যদি কমে যায় তাহলে ডলারের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়ন আরো বাড়বে। এতে রফতানি আয়ের উপর চাপ আরো বেড়ে যাবে।
 
এদিকে নির্বাচনের আগে দেশ থেকে টাকা পাচার বেড়ে যায়। এখন বিশ্বব্যাপী টাকা পাচার বা মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে অনেক বেশি কড়াকড়ি হওয়ায় আমদানি ও রফতানির মাধ্যমে টাকা পাচার হয়ে থাকে।  

রফতানির ক্ষেত্রে আন্ডার ইনভয়েসিং ও আমদানির ক্ষেত্রে ওভার ইনভয়েসিং করে টাকা পাচার হয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য হচ্ছে না। এখন নির্বাচনের সময় এ সামঞ্জস্যহীনতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৮
এসই/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।