ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রমজানকে কেন্দ্র করে বেড়েছে মসলা-মাংসের দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৮
রমজানকে কেন্দ্র করে বেড়েছে মসলা-মাংসের দাম সবজি ও মাংসের বাজার

ঢাকা: শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় কয়েক সপ্তাহ ধরে কাঁচাবাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়া আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা ও মাংসের দাম।

দফায় দফায় দাম বৃদ্ধির কারণে নাজেহাল ক্রেতারা, পাশাপাশি বিক্রি করতে গিয়ে অতিরিক্ত দাম হাকাহাকির কারণে বিরক্ত বিক্রেতারাও।     

শুক্রবার ( ৯ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কাওরান বাজার, মতিঝিল, সেগুনবাগিচা, পল্টন এলাকার বাজারগুলোতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এ চিত্র।

 

সবজির বাজারে পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, সবজির চালান এখন কমে গেছে। শীতকালীন সবজি এখনও বাজারে যা পাওয়া যাচ্ছে তা গোডাউনে সংরক্ষিত। আর অল্প কিছু আসছে মাঠ থেকে। তবে নতুন সবজির ফলন হওয়ার আগ পর্যন্ত দাম কমবে না। এছাড়া হুট করেই তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় ট্রাকে আনার সময়েই অনেক সবজি পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।  

আবার রমজানকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই কিছুটা দাম বাড়া শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন কাওরান বাজার ও মিরপুর-১ এর পাইকারি সবজি বিক্রেতারা।

মসলাসহ মাংসের বাজারে দাম বাড়ার একমাত্র কারণ রমজান মাস বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মাংস বিক্রেতা হানিফ বাংলানিউজকে জানান, এখন থেকেই অনেকে মাংস কিনে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করছেন। বাজারে চাহিদা এ কয়েক সপ্তাহে অনেক বেড়ে গেছে।

এছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবারে দাম বেশি থাকে। এর মধ্যে রমজানের পর ছাড়া দাম কমার সম্ভাবনা একেবারেই নেই।

মাছের বাজারমিরপুরের মসলার খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে মসলার আমদানি কমে গেছে। রমজানের জন্য মসলার আমদানিকারকরা মসলা আনলেও গুদামজাত করে রাখছেন। এ কারণে খুচরা বাজারে দাম এখন অল্প অল্প করে বাড়ছে। রমজানের আগ দিয়ে যখন গুদামজাত মসলাগুলো ছাড়া হবে তখন হুট করেই দাম অনেক বেড়ে যাবে।    

রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে সর্বশেষ খুচরা মূল্য অনুযায়ী  নাজিরশাইল চাল ৭২, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৫, জিরাশাইল ৬০,  বিআর-২৮ ৫৫, স্বর্ণা ও পারিজ ৪৫,  দেশি মসুর ডাল ১০০, আমদানিকৃত  মসুর ডাল ৭০, দেশি পেঁয়াজ ৫০, আমদানি করা পেঁয়াজ ৪৫,  আমদানি করা রসুন ১০০, দেশি রসুন ৬৫, চিনি ৬০  এবং আদা ১০০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে।    

এদিকে সবজির খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি গাজর ৩২, আলু ২৫, টমেটো ১৫ থেকে ২০, পেঁপে ২০, বেগুন ৬০, শিম ৩৫ থেকে ৪০, মূলা ১৫, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৬০, ধনিয়াপাতা ৫০,  ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৫৫ থেকে ৬০, করলা ৮০ থেকে ৮৫,  শশা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া লাউ প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০, প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২৫ থেকে ৩০, লাল শাক, পালং শাক ও ডাটা শাক ৩ আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি শীতকালীন সবজির বাজার শেষ হওয়ার পর সবজির দাম বেড়ে যায়। এখন সে পরিস্থিতি চলছে।  

কাঁচাবাজারের সবজিঅন্যদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও মাংসের বাজারে প্রতি কেজি মাংসের ২ থেকে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছের সর্বশেষ খুচরা বাজার অনুসারে প্রতি কেজি কাতল মাছ ২৩০, পাঙ্গাশ ১২০, রুই ২৫০-২৮০, সিলভারকার্প ১৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০, ইলিশ মাছ পিস প্রতি (মাঝারি) ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া মাংসের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৫০ থেকে ৪৮০, খাসির মাংস ৭০০-৭৫০, ব্রয়লার মুরগি ১৪০, দেশি মুরগি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকায় বাজার করতে আসা ফয়সাল জানান, সপ্তাহের এ (শুক্রবার) দিনটাতে দাম অনেক বেশি থাকে। অন্যান্যদিন তো আর সাপ্তাহিক বাজারটা করার সুযোগ থাকে না। নির্দিষ্ট দাম রাখার ব্যাপারে সরকারের নজর দেওয়া উচিৎ। দাম নির্ধারণ করা ছাড়াও মনিটরিং থাকা প্রয়োজন। কিছু কিছু বাজারে সরকারের নির্ধারিত দামের চার্ট থাকলেও সেটাতে বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছা অনুসারে দাম লেখেন।

মতিঝিলে বাজার করতে আসা শিপন বলেন, বাজার করতে এলে কখনও কাঁচা বাজারের ভেতর থেকে আবার কখনও ভ্যান থেকে তিনি। ভ্যানে দামে একটু কম পাওয়া যায়। আবার সুপার শপগুলোতে মাঝে মাঝে ছাড় থাকে। এক্ষেত্রে আমাদের অনেক খোঁজখবর রাখতে হয়।

বাংলাদেশ সময়:  ১২২১ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৮
এমএএম/আরএ   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।