ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

হঠাৎ পানের বাজারে আগুন

মাহিদুল ইসলাম রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
হঠাৎ পানের বাজারে আগুন পানের দাম ঊর্ধ্বমুখী কারণে বিপাকে পড়েছেন পান খাওয়া ব্যক্তিরা। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: এক সময় রাজা-মহারাজারা অতিথি আপ্যায়নে পরিবেশন করতেন বাহারী সব মশলা দিয়ে তৈরি করা খিলি পান। সেইকাল থেকেই পানের কদর আজও সমাজের সব স্তরের মানেষর কাছে।

এখনও গ্রাম-গঞ্জের বাড়িতে বা প্রতিষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নে পান পরিবেশন করা হয়ে থাকে। এরই মধ্যে অনেকে নিয়মিত পান খাওয়ার অভ্যাস করলেও আবার কেউবা হঠাৎ খেয়ে থাকে শখের বশে।

সামাজিক আপ্যায়নের অন্যতম একটি উপাদান পান। আর বৃদ্ধ বয়সি অধিকাংশ নারী-পুরুষেরা নিয়মিত পান খান।

সারাদেশের পানের বাজার দর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে গত দুই সপ্তাহ থেকে হঠাৎ উত্তাপ হয়ে উঠে। পানের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় পান খাওয়া ব্যক্তিরা পড়েছেন বিপাকে।
পানের দাম ঊর্ধ্বমুখী, ক্রেতা শূন্য অবস্থায় বসে আছেন পান ব্যবসায়ী।  ছবি: বাংলানিউজ
দিনাজপুরে একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত দুই সপ্তাহ আগে বড় আকারের পান বিড়াপ্রতি (৬০টি) বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। যা বর্তমানে প্রায় পাঁচ গুন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা দরে। তবে আকার অনুসারে অন্যান্য পানের দাম গড়ে দুই থেকে আড়াই গুন বৃদ্ধি পেয়েছে।  

চলতি মৌসুমে তীব্র শীতের পাশাপাশি ঘন কুয়াশার কারণে বরজে ছত্রাক আক্রমণ করায় পান গাছে পচন রোগ দেখা দেয়। যে কারণে চাষীরা বাজারে চাহিদা মোতাবেক পান সরবরাহ করতে না পারায় দেখা দিয়েছে চরম সংকট। এ সংকটের কারণেই পানের দাম হঠাৎ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজার এলাকার পান ব্যবসায়ী রহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয়ভাবে পানের তেমন চাষ না হওয়ায় রাজশাহী, কুষ্টিয়া ভেড়ামারা, চুয়াডাঙ্গা থেকে আমদানি হয়ে থাকে এ জেলায়। চলতি মৌসুমে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় বরজে ছত্রাকের আক্রমণের কারণ পচতে থাকে পান। বাজারে দেখা দেয় সংকট।

ইতোপূর্বে দেশের অন্যান্য জেলা থেকে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই ট্রাক পান আসলেও সংকটের কারণে দু’দিন পরপর আসছে তাও পরিমাণে কম। গত দু’সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় তিন গুন দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভোগান্তিও কম নয়। মূলধন লাগছে বেশি আর লাভ হচ্ছে আগের মতোই। তবে দ্রুত পানের বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে এ ব্যবসায়ী আশা প্রকাশ করেন।  

দিনাজপুর শহরের কালিতলাস্থ থানা মোড় এলাকার খুচরা পান ব্যবসায়ী সুমন চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েক বছর থেকে প্রতি খিলি পান ৫ টাকা বিক্রি করছেন। হঠাৎ এভাবে কয়েক গুন পানের দাম বাড়লেও গ্রাহকরা খিলি প্রতি পাঁচ টাকাই দিচ্ছেন। এই অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে খিলি পাকের আকার কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। দাম বেড়ে যাওয়ায় খিলি পান বিক্রিও কমে গেছে।  

দিনাজপুর শহরের সুইহারী চৌরঙ্গী মোড় এলাকার বাসিন্দা মো. রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ খিলি পান খাইতেন। দাম বেড়ে যাওয়ায় পান খাওয়া কমিয়ে এখন দিনে ১৫ থেকে ২০টি পান খাচ্ছেন।  

প্রতিদিনের অভ্যাস অনুযায়ী পান খেতে না পারায় কিছুটা অসুবিধা হলেও মেনে নিয়ে চলতে হচ্ছে। তবে পানের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।