ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আবাসন শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৫
আবাসন শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আবাসন শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দুই তিন বছরের মধ্যে এ শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।



শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) কার্যালয়ে এক সভায় আবাসন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন।

একই সঙ্গে আবাসন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলডিএ) সেক্রেটারি জেনারেল মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন বলেন, উন্নত আবাসন ব্যবস্থা একটি জাতির সভ্যতার মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। আবাসন শিল্প একটি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও  সমৃদ্ধির চালিকা শক্তিও বটে।   একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আবাসন শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম।

তিনি বলেন, আবাসন শিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে ২৬৯টি উপ-শিল্প খাত জড়িত।   অর্থনৈতিক উন্নয়নের যোগসূত্রে ১৪টি শিল্পের মধ্যে আবাসন খাত তৃতীয়।

‘প্রতিবছর ৩ থেকে ৫লাখ বাসস্থনের প্রয়োজন হয়। এতে আগামী ২০ বছরে ৪০লাখের বেশি বাসস্থানের দরকার হবে। কিন্তু এ আবাসন শিল্প আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।   এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে এই শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। ’

মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন বলেন, আবাসন শিল্পের সঙ্গে ১২ হাজার ৫০০টি উপ খাত রয়েছে। এসব খাতে ২৫ থেকে ৩০লাখ লোকের জীবিকা জড়িত। কিন্তু বর্তমানে আবাসন শিল্প খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপ খাতগুলোর উৎপাদনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, উৎপাদন শিল্পেও স্থবিরতা দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে। প্রবাসীরাও বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছে না।

এজন্য আবাসন শিল্প সংশ্লিষ্ট আইনি জটিলতাকেই দায়ী করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে বিএলডিএ-এর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, চারদিকে আইন দিয়ে আষ্টে-পৃষ্টে ধরলে এ আইন ছাড়াবে কে?  তাই আইনি জটিলতা এড়িয়ে আবাসন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ব্যাংক সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার প্রস্তাব করছি।

একই সঙ্গে ভূমি রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোরও দাবি জানান তিনি।

বসুন্ধরা গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ইঞ্জিনিয়ারিং) ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম শামীম বলেন, ড্যাপ আতঙ্কের কারণে আবাসন শিল্পে অনেকেই বিনিয়োগ করতে পারছে না। এখন আবার ড্যাপ সংশোধন করে কনজারভেটিভ এরিয়া দেখানো হচ্ছে।

এই কনজারভেটিভ এরিয়া দিয়ে নতুন ‘ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।  

বাংলাদেশ পেইন্টস ম্যানুফ্যাকচারস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশিদ বলেন, আবাসন শিল্পের ধ্বংসের কারণে পেইন্ট সেক্টরও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আমাদের কাজ হয় সব কিছু শেষ করার পর। তাই যেখানে ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে না, সেখানে পেইন্ট শিল্প কিভাবে টিকে থাকবে।

সভায় বাংলাদেশ ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মো. আবু বক্কার বলেন, ২০১৩ সালের ইট পোড়ানো নীতিমালা দিয়ে আমাদের ব্যবসাকে আটকে দেওয়া হয়েছে। আমরা মাটির অভাবে ইট উৎপাদন করতে পারছি না।

রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে রিহ্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) প্রকৌশলী সরদার আমিন, রিহ্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রথম) লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রশাসন) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, বাংলাদেশ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি আব্দুল আহাদ, বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর সিদ্দিকী প্রমুখ বক্তব্য দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৫
এসএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।