ঢাকা, শনিবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম চড়া, স্থিতিশীল মাছ-মাংস 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম চড়া, স্থিতিশীল মাছ-মাংস 

ঢাকা: শীতের সবজিতে ভরপুর বাজার, এতে কিছু কিছু সবজির দাম কমেছে। তবে অধিকাংশ সবজি এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

তবে অনেকটা স্থিতিশীল মাছ-মাংসের দাম। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু, খাসি ও মুরগি।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় ফার্মগেট ও মোহাম্মদপুর এলাকার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সবজির সরবরাহ বাড়লেও বিক্রেতারা আগের দামেই চালিয়ে যেতে চাইছেন অভিযোগ ক্রেতাদের। বাজার নজরদারি বাড়ালে দাম কমবে বলে মনে করছেন তারা।

সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, বরবটি ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স বাজার ভেদে প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি আকার ভেদে প্রতিটি ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, পাতাকপি আকার ভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলা বাজার ভেদে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা এবং গাজর ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মিষ্টি কুমড়ার কেজি  ৫০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, শসা বাজার ভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০ টাকা, বড় কদু ৬০ টাকা, ক্যাপসিকাম ৩০০ টাকা এবং পাকা টমেটোর কেজি ১৫০ টাকা। বিটের কেজি ২২০ টাকা। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে।

দাম না কমা নিয়ে ক্রেতাদের অস্বস্তি থাকলেও বিক্রেতারা বেশ চিন্তামুক্ত হয়েই বিক্রি করছেন। মিরপুর-২ এ কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা আলিমুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অন্য কোনো ম্যাকানিজমে দাম কমার আশা নেই। শীত এসেছে, সরবরাহ বেড়েছে। পণ্যের দাম কমার কথা, কিন্তু সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।  

দাম না কমায় মিরপুর-১৩ এর বাজার করতে আসা রাহেল খাতুন অভিব্যক্তিও একই। তিনি বলেন, শীত তো এলো, বাজারে সবজির দাম কমলো কই! দুয়েকটি সবজির দাম কমলেও অধিকাংশই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।  

তবে বিক্রেতারা খুশি সবজির সরবরাহের কারণে। মিরপুর-২ এর সবজিবিক্রেতা আরজেদ আলী বলেন, সবজির সরবরাহ ভালো। দামও একটু কমেছে। আরও কমবে ইনশাআল্লাহ। বেশি সরবরাহ হলে মূল্য বেশি কমবে।

দাম কমেছে শিম, কাঁচা মরিচ ও বিভিন্ন ধরনের শাকের 

রাজধানীর বাজারে দাম কমার তালিকায় রয়েছে শিম ও কাঁচা মরিচের। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ধরন ভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরেও। কাঁচা মরিচের কেজি ১২০ টাকা।

শীতের বাজারে সব ধরনের শাকের সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি দামও কিছু কিছু ক্ষেত্রে কমেছে। লাল শাক, পালং, কলমি লতার আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্য সময়ে এসব শাক ২০ টাকা আঁটি বিক্রি হতো।

তবে এখনো দাম সেভাবে পড়েনি পুঁই শাক, লাউয়ের ডগার। পুঁই, মটরশাক ও লাউ ডগার আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।  

পেঁয়াজের সঙ্গে পাতাও যখন সবজি

শীতের বাজারের অন্যতম অনুষঙ্গ পাতাসহ পেঁয়াজ ও ফুলকি। রাজধানীর বাজারে পাতাপেঁয়াজের দাম ৭০ থেকে বাজার ভেদে ৮০ টাকা, ফুলকির কেজি ১০০ টাকা।

আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল

রাজধানীর খুচরা বাজারে চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা কেজি। মিনিকেট (মোজাম্মেল) ৭৮ টাকা, রশিদ ব্র্যান্ডের চিকন চাল ৭৫ টাকা। মধ্যমমানের চিকন চাল আঠাশ বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকায়। গুটি চাল ৫৫ টাকা, পাইজাম ৬০ টাকা।

পেঁয়াজ ও আলুতে এখনো আগুন

বাজারে পুরাতন আলু ৮০ টাকা, নতুন আলু ৯০ টাকা। ডিমের ডজন ১৪০ টাকা। বাজার ভেদে প্রতি হালি ডিমের দাম ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।  

দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা, আমদানি রসুন ২৪০ টাকা, দেশি রসুন ধরন ভেদে ১৬০ টাকা থেকে শুরু ১৯০ টাকা। আদা দেশি ১৪০ টাকা, আমদানি করা বড় আদা ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।  

মাছ-মাংস আগের দামেই

রাজধানীর বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি, দামে কোনো পরিবর্তন নেই।  প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির ১৯০ টাকা,  সোনালী ৩২০ টাকা এবং লেয়ার ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭০০ টাকা ও খাসির মাংস  ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়, কাতলা ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা। বড় রুই-কাতলার দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি।  

পাঙাশ আকার ভেদে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে সিলভার কার্প। তুলনামূলক কম দামের মাছের মধ্যে তেলাপিয়া বাজার ও আকার ভেদে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

৪০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজির দাম ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, এক কেজির কম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।

মাঝারি আকারের আইড় ১ হাজার ১০০ টাকা, বড় আইড় ১ হাজার ৮০০ টাকা, বড় বোয়াল ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রিঠা মাছ ৩৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, বাইম ৮০০ টাকা, দেশি ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের ট্যাংরা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় শোলের কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা, ছোট শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচকি মাছের কেজি ৬০০ টাকা, বড় চিংড়ি ৯০০ টাকা ও ছোট চিংড়ি ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রূপচাঁদা ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, কোরাল মাছ ( এক কেজি ওজনের) ৮০০ টাকা, চাপিলা ২৪০ টাকা, শরপুঁটি ২২০ টাকা, পোয়া মাছের কেজি ২৪০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
জেডএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।