ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এক ছাতার নিচে জুয়েলারি শিল্পের আধুনিক মেশিনারিজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২৪
এক ছাতার নিচে জুয়েলারি শিল্পের আধুনিক মেশিনারিজ

ঢাকা: বর্তমানে দেশের বেশির ভাগ স্বর্ণালংকারের দোকানে হাতে তৈরি গহনা বিক্রি করা হয়। হাতে গহনা তৈরি করতে গেলে মূল্যবান এই ধাতুর কিছুটা ক্ষয় হয়ে থাকে।

যে কারণে গহনা তৈরিতেই মূল্য অনেকটা বেড়ে যায়। আর এই গহনা যদি আধুনিক পদ্ধতিতে কারিগর দিয়ে মেশিনের সাহায্যে তৈরি করা যায়, তবে গহনা তৈরিতে স্বর্ণের যে ক্ষতি, তা বহু অংশে কমে আসবে।

দেশের বাজারে স্বর্ণশিল্পের সব ধরনের আধুনিক মেশিনারিজ পরিচয় করিয়ে দিতে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) পুষ্পগুচ্ছে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) ২০২৪।

প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী ব্যবসায়ী দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

দেশে আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে ভারত, ইতালি, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডসহ ১০ দেশের প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা যায়, দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি তাদের উৎপাদিত আধুনিক জুয়েলারি তৈরির যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে। দুপুর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জুয়েলারি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা ভিড় করছেন স্টলগুলোতে। স্বর্ণশিল্পে জড়িত ব্যবসায়ী, শিল্পী ও কারিগররা স্টলগুলোতে থাকা বিক্রয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকে যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি সম্পর্কে খুঁটিনাটি নানান বিষয় জানছেন। অনেকে পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী আধুনিক মেশিন কিনছেন।

প্রদর্শনীতে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত জুয়েলারি তৈরির মেশিন। মেশিনগুলো ব্যবহার করে অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও জটিল নকশার জুয়েলারি তৈরি করা সম্ভব। এছাড়াও লেজার ওয়েল্ডিং, থ্রি ডি প্রিন্টিংসহ আধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন জুয়েলারি তৈরির মেশিনারিজ প্রদর্শন করা হচ্ছে।

স্বর্ণের গহনা তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করছে আরআইএন মাইক্রোটেক কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর অভিষেক ধর বাংলানিউজকে বলেন, এই মেলায় আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে গহনা তৈরির নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছি। আমাদের মেশিনারিজগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি আইএনসি ইউএসএ কোম্পানির তৈরি। আমরা বাংলাদেশে তাদের একমাত্র লোকাল এজেন্ট। আমাদের এখানে গোল্ড টেস্টিং মেশিন, লেজার মার্কিং মেশিন, লেজার কাটিং মেশিন, লেজার ঝালাই মেশিন, ইলেকট্রনিক ওজন মাপার মেশিন এবং গহনা পরিষ্কার করার মেশিন এনেছি। আমাদের এখানে স্বর্ণের ক্যারেট ও কোয়ালিটি টেস্ট করা মেশিন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

স্বর্ণের গহনা তৈরির দেশীয় যন্ত্রাংশ নিয়ে প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে বণিক জুয়েলারি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ। প্রতিষ্ঠানের মালিক ভবেশ কুমার বণিক বলেন, আমাদের শপে গহনা তৈরির সবধরনের মেশিন বিক্রি করা হয়। প্রায় ৪০ পদের মেশিন নিয়ে এসেছি আমরা। এর মধ্যে ৮ থেকে ১০ ধরনের মেশিন আমরা দেশে তৈরি করেছি। আর বাকি মেশিনগুলো ভারত ও চীন থেকে আনা। সোনা-রুপার পাত তৈরির মেশিন, তার তৈরি করার মেশিন, পলিশ মেশিন, রিং বড় করার মেশিন আছে আমাদের স্টলে। পাশাপাশি পলিশিং করাসহ গহনা তৈরির যাবতীয় যন্ত্রাংশ আছে।

চীন ও ইতালি থেকে বাহারি ডিজাইনের স্বর্ণের চেইন তৈরির অটোমেটিক মেশিন নিয়ে মেলায় এসেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এম শাকসি ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার গুঞ্জন প্রিয়দর্শী বাংলানিউজকে বলেন, চেইন তৈরির অটোমেটিক মেশিন আছে আমাদের কাছে। মেশিনগুলোর মূল্য ৪০ থেকে ৬০ লাখ টাকার মতো। এই মেশিনগুলো চীন ও ইতালি থেকে আনা। একেকটি মেশিন একেক ডিজাইনের চেইন তৈরি করে।

জুয়েলারি শিল্পের সিকিউরিটি সিস্টেম নিয়ে এসেছে র‌্যাট’স বিডি। প্রতিষ্ঠানটির সিইও তৌফিক রেজা বাংলানিউজকে বলেন, আজকের মেলায় সবাই জুয়েলারি বানানোর মেশিনারি নিয়ে এসেছে, আমরা এনেছি সিকিউরিটি সিস্টেম নিয়ে। ট্যাগস, স্টক কন্ট্রোল ডিভাইস, স্মার্ট ট্রে, ইনভেন্টারি ট্রে, বিলিং এএম ট্যাগ, সফটওয়ার, স্মার্টকার্ড, আরএফআইডি অ্যান্টি থিপ সিস্টেম, সেফ ট্র্যাকিং সিস্টেম এই ধরনের পণ্য নিয়ে এসেছি।

তিনি বলেন, স্বর্ণ ব্যবসার নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা আমাদের পণ্যগুলো নিয়ে এসেছি। আমাদের পণ্যের পরিচিতি দিতেই প্রদর্শনীতে আসা। আমরা চীন ও ভারত থেকে পণ্যগুলো নিয়ে এসেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২৪
ইএসএস/জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।