ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফেনীতে গবাদি পশু লালন-পালনে ঝুঁকছেন তরুণরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৪
ফেনীতে গবাদি পশু লালন-পালনে ঝুঁকছেন তরুণরা

ফেনী: ফেনীতে গবাদিপশুর খামার, লালন-পালন ও মোটাতাজাকরণে ঝুঁকছেন তরুণরা। শিক্ষিত, বেকার, বিদেশ ফেরত ও চাকরি ছেড়ে আসা যুবকেরা বিনিয়োগ করছেন পশু পালনে।

সফলতার দেখা পাওয়ায় বাড়ছে নতুন উদ্যোক্তার সংখ্যাও। জেলার ৫ হাজার ২৪৬ জন গবাদি পশুর খামারির মধ্যে তিন হাজারের বেশি খামারি তরুণ। সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত সরকারি সহায়তা পেলে আরও অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে গবাদিপশু পালনে আগ্রহী হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।

ফেনী শহরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী অরাফাত খান। করোনাকালীন ধাক্কা সামাল দিতে না পেরে ঝুঁকছেন গবাদি পশু পালনে। প্রথম বছর ব্যবসা বুঝতে সময় লাগলেও গেল বছর বেশ ভালো ব্যবসা হয়েছে। চলতি মৌসুমে শতাধিক গবাদিপশু লালন-পালন হচ্ছে তার খামারে। ভালো লাভের আশা করছেন এবছরও।

ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম একাডেমি থেকে পাঠ চুকিয়ে জাপানি কেমিক্যাল টেঙ্কার কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন আহমেদ আদর চৌধুরী। সেই কাজে মন বসেনি বলে জাহাজ ছেড়ে গ্রামে এসে বাবাকে নিয়ে লেগে পড়েন গবাদি পশু লালন-পালনে। এখন ২৮ বছরের এই যুবক পুরোদস্তুর একজন খামারি। ছাগলনাইয়া পৌর এলাকার বাঁশপাড়ায় ১৭ একর জায়গায় গড়ে তুলেছেন অ্যাগ্রো ফার্ম। এখানে কাজ করছে আরও ৩৮ জন শ্রমিক।

গবাদিপশু লালন-পালন ও খামার করে সফলতার এমন গল্প একটি-দুটি নয়, আহরহ। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে জেলার ৫ হাজার ২৪৬ খামারির মধ্যে তিন হাজারের বেশি খামারি বয়সে তরুণ। পশু লালন-পালনে এসব তরুণ আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করায় লাভও মিলছে ভালো।

এসব তরুণ উদ্যোক্তারা জানান, সুষ্ঠু ও পরিকল্পিতভাবে সরকারি সহায়তা পেলে তরুণরা নির্বিঘ্নে গবাদি পশু লালন-পালন করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখতে পারবে।

আহমেদ আদর চৌধুরী বলেন, সরকারকে তরুণদের দেখতে হবে। তরুণদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঋণসহায়তা সহজিকরণ করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় যাদের অনেক আছে তারাই পায়। যাদের নাই কিংবা দরকার তারা পান না। এ বিষয়ে সুষম ব্যবস্থাপনা থাকতে হবে।

আরাফাত খান বলেন, খামারে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি একদমই সহজ নয়। তবে লেগে থাকলে আর পরিশ্রম করলে এটি কঠিন কিছু নয় বরং সম্ভাবনার খাত।

তবে চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত তাপপ্রবাহ ও খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে পশু পালনে খরচ বেড়েছে বলে জানান খামারিরা। এছাড়াও সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পশু প্রবেশ নিয়েও প্রকাশ করেছেন শঙ্কা।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানায় তরুণ উদ্যোক্তাদের পরামর্শ, পশুদের চিকিৎসাসহ বিভিন্নভাবে প্রয়োজনীয় সহায়তা করছে সরকার। প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে ঋণ সহায়তাও।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক বলেন, এটি আশার আলো, তরুণরা এ পেশায় আসছে। তরুণরা আসার কারণে তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে উৎপাদনও বাড়ছে।

আসন্ন কোরবানি মৌসুমে ফেনীতে চাহিদা রয়েছে ৮৬ হাজার পশুর। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৯০ হাজার ২৫০টি। খামার ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত রয়েছেন ৫ হাজার ২৪৬ জন খামারি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৪
এসএইচডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।