ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে আরো ডিম আমদানি: তপন কান্তি ঘোষ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে আরো ডিম আমদানি: তপন কান্তি ঘোষ তপন কান্তি ঘোষ

ঢাকা: বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, বাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণে আনতে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে বাজার মনিটরিং করে যদি দেখা যায়, তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না, তাহলে আরো আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।

 

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তপন কান্তি।  

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আরো ডিম আমদানির অনুমতি দেব কি না, তা বাজার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। আমরা প্রতিনিয়তই বাজার মনিটরিং করছি। দরকার হলে আরো আমদানির অনুমতি দেব, দরকার না হলে না-ও দিতে পারি।  

দেশের উৎপাদিত ডিমকেই প্রাধান্য দিতে চান বলে জানান এই কর্মকর্তা।  

সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, গত মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম  একটি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সাড়ে ১০ টাকা উৎপাদন খরচ। আর খুচরা পর্যায়ে বিক্রির জন্য ১২ টাকা করে। দেখা যাচ্ছে, খুচরা পর্যায়ে এ দামে বিক্রি হচ্ছে না বলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দেখতে পেয়েছে। এজন্য বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সিদ্ধান্তে কিছু ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছি। চারটি কোম্পানিকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কোম্পানি এক কোটি ডিম আমদানি করতে পারবে।

কোথা থেকে আমদানি করা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি কোম্পানি বলেছে যে ভারত থেকে তারা ডিম আনবে। বাকি তিনটির বিষয়ে আমার খেয়াল নেই। তবে যে কোনো উৎস থেকে তারা ডিম আনতে পারবে, যেখানে দাম কম পাবে, কিংবা যেখান থেকে দ্রুত আনতে পারবে।

আমদানিতে কোনো শর্ত আছে কি না, প্রশ্নে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে কোনো শর্ত নেই। সুবিধামতো আনবে, যাতে ভোক্তারা কম দামে পান। তবে বিক্রির ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যে দাম বেঁধে দিয়েছে, সেই দামেই বিক্রি করতে হবে। অর্থাৎ ১২ টাকায় ডিম বিক্রি করতে হবে।

যেসব দেশে অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা অন্য সমস্যা আছে, সেসব দেশ থেকে ডিম আমদানি করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন এই সিনিয়র সচিব।  

তিনি বলেন, আমরা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করেছি। সেই ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ বাজারকে আমরা স্থিতিশীল করতে চাচ্ছি। আপনারা জানেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন চার কোটি ডিম প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আমরা একদিনের ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এটা মার্কেটে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে কিংবা আমাদের খামারিরা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছি না।  

তিনি বলেন, তবে আমদানির অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে অবস্থা বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত নিই।

বাজার নিয়ন্ত্রণ করা গেলই না। এরমধ্যে ডলার সংকট রয়েছে। তার মধ্যে এই আমদানির অনুমতির সিদ্ধান্ত। তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণে কী সরকার ব্যর্থ হচ্ছে না? উত্তরে তিনি বলেন, এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ বলতে আপনি কী বোঝাচ্ছেন, নিয়ন্ত্রণ বলতে বাজারটা স্থিতিশীল বা আগের যে দাম ছিল, সেখান থেকে খুব বেশি বেড়ে না যাওয়া। যদি এটিই বুঝিয়ে থোকেন, তাহলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে যে টুলগুলো রয়েছে, তা হচ্ছে, উৎপাদন কত হচ্ছে, আমদানি কত হচ্ছে, এই দুটি মিলিয়ে আমরা বাজারের চাহিদা মেটাতে পারছি কি না।

তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা দেশের যুবসমাজের কর্মসংস্থান দেখবো। দেশের মানুষের আর্থিক উন্নয়নে এই শিল্প দেশে গড়ে উঠুক, তা সবাই চাই। সরকারেরও মূল লক্ষ্য এটি। কিন্তু যখন এই সুযোগে বাজার থেকে কেউ বেশি মূল্য নিতে চায়, ভোক্তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে যায়, তখন আমদানির কথা ভাবতে হবে।

সরকার ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। যারা আমদানি করবেন, তারা কি সর্বোচ্চ দামটি ধরে বিক্রি করবেন, নাকি ভোক্তারা আরও সাশ্রয়ী মূল্যে কেনার সুযোগ পাবেন, প্রশ্নে তিনি বলেন, দাম আসলে অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে, এখন যদি অনেক বেশি আমদানি করতে দেওয়া হয়, তাহলে দাম কমতেও পারে। আর দাম কম না হলে যিনি আমদানি করবেন, তিনি তা করবেন না। কারণ তাকে তো ডিম বাজারে বিক্রি করতে হবে।  

বাজারে যদি ডিম নির্ধারিত দামের নিচে বিক্রি করা না যায়, তাহলে আরো আমদানির অনুমোদন দিতে হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তপন কান্তি ঘোষ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩ 
জিসিজি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।