চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দুর্ভোগ নিরসনে এবার কম খরচে দ্রুতযান স্পেশাল সার্ভিস চালু করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় চবির জিরো পয়েন্ট থেকে দ্রুতযান সার্ভিস উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
এ সময় চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী প্রক্টর মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান, সহকারী প্রক্টর মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হোসাইন, ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মো. নুরুল হামিদ কানন। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি বাস মালিক সমিতির সভাপতি হাজী রকিবুল আমিন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, দ্রুতযান সার্ভিস চালুর ফলে শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে। শিগগিরই আমরা জোবাইক ও ইকার চালুর পরিকল্পনা করছি। শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা দিনরাত কাজ করছি।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, শহর থেকে ক্যাম্পাস দূরে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে নানা সমস্যা ছিল। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করেছি। দ্রুতযান বাস সার্ভিস চালু হওয়া এরই ফলস্বরূপ। আশা করি এই সেবা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাবে।
চুক্তির শর্তাবলি:
চবি রেলস্টেশন সংলগ্ন জিরোপয়েন্ট থেকে দ্রুতযান স্পেশাল সার্ভিসের বাসসমূহ নিউমার্কেট পর্যন্ত ২০ মিনিট পরপর ছেড়ে যাবে এবং নিউমার্কেট থেকে চবি ক্যাম্পাসে ফিরে আসবে। যাত্রী পূর্ণ হলে গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পূর্বে ছেড়ে যাবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিনে বাস ছাড়ার সময় পরিবর্তন হতে পারে।
নির্দিষ্ট টিকেট কাউন্টার থেকে শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করবেন, তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত জনপ্রতি ২৫ টাকা এবং নিউমার্কেট পর্যন্ত ৩০ টাকায় যেতে পারবেন। তবে সাধারণ যাত্রীরা নিয়মিত ভাড়া ৪০ টাকায় টিকিট নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দ্রুতযান এর নিউমার্কেট বা মুরাদপুর থেকে হাটহাজারীগামী বাসসমূহেও একই হারে ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন। যথাসময়ে গাড়ি ছেড়ে যাবে। আসন পূর্ণ না হলে খালি আসনে ১নং গেইট থেকে যাত্রারত অবস্থায় ঐ খালি আসনের সমপরিমাণ যাত্রী উঠতে পারবে। তবে ১ নম্বর গেইটে সর্বোচ্চ ৫ মিনিট সময় যাত্রী উঠানোর জন্য সময় দেওয়া হবে।
প্রতিটি বাসের চালক ও হেল্পার নির্ধারিত পোশাক পরবেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চালক ও হেল্পার পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। চবি জিরো পয়েন্ট টিকেট কাউন্টারের সামনে মনিটরিং এর জন্য একাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।
প্রতিটি বাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান স্টিকার লাগানো থাকবে। জরুরি যোগাযোগের জন্য স্টিকারে চবি কর্তৃপক্ষ ও দ্রুতযান স্পেশাল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের দুটি মোবাইল নম্বার দেওয়া থাকবে। প্রথামিক পর্যায়ে ৪০টি বাস দিয়ে সার্ভিস শুরু হবে যা প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। এই চুক্তির আওতায় চলাচলকারী বাস সমূহের তথ্য দ্রুতযান কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চবি প্রক্টর অফিসে জমা থাকবে। প্রতি ২০ মিনিট পরপর বাস ছেড়ে যাবে।
কোনো চালক বা হেল্পার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিবেন। এছাড়া কোনো চালক বা হেল্পার শিক্ষার্থীদের দ্বারন অশোভন আচরণের শিকার হলে তা দ্রুতযান কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানাবেন।
তেলের মূল্য কমলে বা বাড়লে আলোচনা সাপেক্ষে ভাড়া পরিবর্তন হতে পারে। চবি ক্যাম্পাস থেকে সকাল ৬ টায় প্রথম বাস এবং রাত সাড়ে ১০ টায় শেষ বাস ছেড়ে যাবে। অপরদিকে নিউমার্কেট থেকে সকাল ৬ টায় প্রথম বাস এবং রাত সাড়ে ১১ টায় শেষ বাস ছেড়ে আসবে।
এই চুক্তি ১ বছরের জন্য প্রযোজ্য হবে। প্রতি বছর আলোচনা সাপেক্ষে চুক্তি নবায়ন হবে। এই চুক্তি বাতিল, সংরক্ষণ, সংযোজন এবং বিয়োজনের ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এখতিয়ারে থাকবে। বাস কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ কর্তৃক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত রুট পারমিটের যাবতীয় কাগজপত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করবে।
বাস রুট:
ক্যাম্পাস থেকে নিউমার্কেট- ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট=> ১নং রাস্তার মাথা=> অক্সিজেন=> মুরাদপুর=> ২নং গেইট=> ওয়াসা মোড়=> কাজির দেউরি=> নিউমার্কেট।
নিউমার্কেট থেকে ক্যাম্পাস- নিউমার্কেট পুরাতন স্টেশন => টাইগার পাস> লালখান বাজার জিইসি মোড় => ২ নং গেইট => বায়োজিত => অক্সিজেন => ১নং রাস্তার মাথা=> চবি রেলস্টেশন (জিরো পয়েন্ট)।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪
এমএ/পিডি/টিসি