ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সেই অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিলো প্রশাসন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৩
সেই অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিলো প্রশাসন ...

চট্টগ্রাম: রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুরে অভিযান চালিয়ে একতা ব্রিক্স কনসার্ন (এবিসি-১) নামে একটি অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। গত ২৫ ডিসেম্বর সংবাদ সংগ্রহের সময় ওই অবৈধ ইটভাটার ছবি তুলে মারধরের শিকার হয়েছিলেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাংবাদিক আবু আজাদ।

 

সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে অভিযান চালায়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আফজারুল ইসলাম ও নমুনা সংগ্রহকারী চন্দন বিশ্বাস অভিযানে অংশ নিয়েছেন।

 

পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ইসলামপুর ইউনিয়নের মঘাছড়ির এবিসি ইটভাটায় কোন লাইসেন্স না থাকায় সেটির চুল্লি, চিমনি এবং ইটভাটায় থাকা কাঁচা-পাকা প্রায় এক লাখ ইট গুড়িয়ে দেয়া হয়।  

এছাড়া পাহাড় থেকে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কাটার দায়ে উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের কেবিএম ইটভাটার মালিক মো. কামাল উদ্দীনকে ৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।  

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বাংলানিউজকে বলেন, রাঙ্গুনিয়ার ইসলামপুরের এবিসি ইটভাটা সম্পূর্ণ অবৈধ ছিল। জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে এবিসি কর্তৃপক্ষ কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাই আমরা সেটির চুল্লি, চিমনি গুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে প্রায় এক লাখ ইট মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আইন ভঙ্গ করে সরকারি নির্দেশনা না মেনে কোন ইটভাটা পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। আমাদের নিয়মিত অভিযান চলবে। সরকার ব্লক ইটের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে। যদি ইটভাটা মালিকেরা চায়, তবে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট তৈরির বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

এর আগে গত ২৫ ডিসেম্বর সকালে রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহের সময় এবিসি ইটভাটার ছবি তোলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহনসহ ৫-৬ জন পিস্তল ঠেকিয়ে সাংবাদিক আবু আজাদকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে তার কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে বেঁধে রেখে তাকে নির্যাতন করে। পরে এবিসি ইটভাটার মালিক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে এবং মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড- সব কেড়ে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরিদিন ২৬ ডিসেম্বর রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় হত্যাচেষ্টা, অপহরণ, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়া, মারধর এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু আজাদ। মামলায় ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মহিউদ্দিন তালুকদার মোহন (৪০), চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী (৫৫), ইটভাটার ম্যানেজার কামরান (৩০), মোহনের সহযোগী কাঞ্চন তুড়ির (৩০) নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাত আরো ৫-৭ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে অভিযুক্ত করা হয়। ওইদিন রাতেই আসামি কাঞ্চন তুড়িকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একদিনের রিমান্ড শেষে আসামি কাঞ্চন তুড়ি বর্তমানে কারাগারে আছেন। গত ৩ জানুয়ারি বাকি আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৩ 
বিই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।