ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপকূল থেকে উপকূল

সতর্ক বার্তা বোঝেন না উপকূলের বাসিন্দারা

এইচ এম লাহেল মাহমুদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২১
সতর্ক বার্তা বোঝেন না উপকূলের বাসিন্দারা

পিরোজপুর: প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময় আবহাওয়া অধিদপ্তর উপকূলবাসীর জন্য যেসব সতর্ক বার্তা প্রচার করে তা বোঝে না বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী জেলা পিরোজপুরসহ উপকূলবাসী। জেলার বিভিন্ন এলাকার চরাঞ্চলে বসবাস করা অনেক মানুষেরই এ সতর্ক বার্তা সম্পর্কে নেই কোনো ধারণা।

এ কারণে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে দুর্যোগকালীন সময়ে করা প্রচারণায় কোনো গুরুত্ব দেন না তারা। ফলে এসব দুর্যোগে প্রাণ হারাতে হয় অনেককে। ২০০৭ সালের সিডরে এলাকায় বহু মানুষ প্রাণ হারান। পানিতে ভেসে যায় অনেকেই।  

এ ‍দুর্যোগের আগে এদের প্রশিক্ষণসহ সতর্কবার্তা সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার দরকার থাকলেও তা হচ্ছে না। ওই সব মানুষকে সংকেত বোঝানোর জন্য উল্লেখযোগ্য বড় ধরনের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় একের পর এক দুর্যোগে হারাতে হচ্ছে বিপুল পরিমাণ জানমাল ও সম্পদ। তবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জেলার ইন্দুরকানী ও মঠবাড়িয়া উপজেলার চরাঞ্চল এলাকার মানুষ। তবে সংকেত বোঝানোর জন্য যা করা হচ্ছে তার তৎপরতা খুবই কম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকার প্রতি বছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্যোগের মাস হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সরকারিভাবে উপকূলের সাধারণ মানুষের জন্য দুর্যোগ পূর্ববর্তী ও দুর্যোগ পরবর্তী নানা সতর্কতা থাকলেও তা কাজে আসছে না উপকূলের স্বল্পশিক্ষিত মানুষের জন্য। কেননা দুর্যোগ পূর্ববর্তী বন্দর কেন্দ্রীক যেসব বিপদ সংকেত বা মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হচ্ছে তা স্থানীয় কম শিক্ষিত বা অশিক্ষিত সাধারণ মানুষরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন না।

জানা যায়, জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার মাঝের চর এলাকার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সেখানে বাস করেন। কোনো ধরনের পানি বৃদ্ধিতে এখানের বাড়ি-ঘর প্লাবিত হয়ে পড়ে। গত কয়েক বছরের উপকূলের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাওয়ার সময় প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে জনসাধারণকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বললেও সিংহভাগ মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাননি। চরাঞ্চলে জনসংখ্যা অনুপাতে বর্তমানে আশ্রয় কেন্দ্র কম। গৃহপালিত পশু নিরাপদে রাখার কোনো টিলা না থাকায় দুর্যোগকালীন সময় গবাদিপশু মায়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে অনীহা দেখা দেয়।  ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত সম্পর্কে এ অঞ্চলের মানুষের তেমন ধারণা নেই। কোনো ধরনের সতর্ক বার্তায় কোন মাত্রার বিপদকে বুঝায় এবং এ সময় কি কি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা তারা বোঝে না। যে কারণে এখানের মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।  

জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার জনগণ আশ্রয়ন কেন্দ্রে বিমুখ। গত আম্পানে এমন চিত্রটি দেখা গেলেও তাদের অনেককেই জোর করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছিল। আসন্ন ঘূর্ণিঝড়টি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা থাকলে আমরা অবশ্যই স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ঝুঁকির সম্ভাবনাদের অবশ্যই জোর করেই আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।