ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বাজেট

প্রাথমিকে ইন্টারঅ্যাক্টিভ শ্রেণিকক্ষ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৬ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৭
প্রাথমিকে ইন্টারঅ্যাক্টিভ শ্রেণিকক্ষ

ঢাকা: টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে মানব সম্পদ উন্নয়নে জোর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাই এবারের বাজেটে শিক্ষাখাতে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন তিনি।

জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় মুহিত বলেছেন, ‘শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’– স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা সার্বিক শিক্ষাখাতের উন্নয়নে আমাদের কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।

প্রাথমিক শিক্ষায় ৫০৩ মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি ভিত্তিক ইন্টারঅ্যাক্টিভ শ্রেণিকক্ষ তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মুহিত।

আর মাধ্যমিক ও শিক্ষা খাতে একটি বৃহৎ প্রকল্প নিয়ে এগোচ্ছেন তিনি।

প্রাথমিক শিক্ষায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে মোট বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন ২২ হাজার ২৩ কোটি ২৮ লাখ ১৯ হাজার টাকা। এরমধ্যে অনুন্নয়ন ১৩ হাজার ২৭১ কোটি ৪০ লাখ ১৯ হাজার এবং উন্নয়ন বাজেট ৮ হাজার ৭৫১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। গতবছরে মোট বরাদ্দ ছিল ১৭ হাজার ৭৯৮ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

আর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় মোট ২৩ হাজার ১৪৭ কোটি ৯৫ হাজার টাকা বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন। এরমধ্যে অনুন্নয়ন ১৬ হাজার ৯৮৩ কোটি ২৯ লাখ এবং উন্নয়ন খাতে ৬ হাজার ১৬৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে মোট বরাদ্দ ছিল ২১ হাজার ৭০৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

প্রাথমিক শিক্ষা
শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও গুণগত উৎকর্ষতা সাধনে ৫০৩ মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি ভিত্তিক ইন্টারঅ্যাক্টিভ শ্রেণিকক্ষ তৈরির পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করেছি বলে জানান মুহিত। পাশাপাশি উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিদ্যমান ও জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়নে ১৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।

এছাড়া প্রতিটি জেলায় মৌলিক সাক্ষরতা ও সাক্ষরতা উত্তর জীবিকায়ন দক্ষতা প্রদানের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পর্যায়ক্রমে ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন প্রশিক্ষণ প্রদান এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি রিসোর্স সেন্টান স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানান মুহিত।

প্রাথমিকে ভর্তির হার বৃদ্ধি এবং ঝরে পড়া রোধে স্কুল ফিডিং, উপবৃত্তি, নতুন অবকাঠামো ও অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণসহ চলমান অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথা জানান অর্থমন্ত্রী। এছাড়াও জরাজীর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন বা পুনঃনির্মাণ কার্যক্রম রয়েছে।

শিক্ষার মানোন্নয়ন
শিক্ষাকে দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়নের অন্যতম প্রধান কৌশল হিসেবে বিবেচনা করে এ খাতকে সরকার সর্ববাধিক গুরুত্ব দিয়ে আসছে বলে জানান মুহিত। বলেন, দিন বদলের সনদ ও রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি আমরা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করছি। আমরা প্রথমেই চেষ্টা করেছি শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে। পরবর্তী অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রশিক্ষত শিক্ষক গড়ে তোলা। এ উদ্দেশ্যে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা অনবরত উন্নীত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ১২০টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ২৮৫টি বেসরকারি কলেজ সরকারিকরণের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সার্বিক শিক্ষা খাতের মানোন্নয়নে অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার, শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ চলমান কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রাখবো।

পাশাপাশি মাধ্যমিক, কারিগরিও মাদরাসা শিক্ষাসহ উচ্চ শিক্ষার প্রসার এবং উৎকর্ষসাধনে চলমান কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে। এ লক্ষ্যে সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম শীর্ষক একটি পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এতে সম্ভাব্য ব্যয় ১৮.২ বিলিয়ন ডলার। তবে একথা অনস্বীকার্য যে শিক্ষার মানোন্নয়ন সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

তিনি বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, উপবৃত্তি প্রদানসহ চলমান অন্যান্য কার্যক্রম আমরা শুধু অব্যাহত রাখছি না, বরং প্রসারিতও করছি।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৫টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যারয় স্থাপনে আমাদের কার্যক্রমকে আরো জোরদার করব। প্রস্তাবিত ৫টির আইন প্রণয়ন হয়েছে এবং তিনটির ভৌত অবকাঠামো স্তাপনে প্রকল্প অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৭
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।