ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

ফের সুযোগ দেওয়া হলো বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোকে

বিজনেস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৬
ফের সুযোগ দেওয়া হলো বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোকে

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দশম জাতীয় সংসদের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রজ্ঞা বলেছে, বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোকে আবারও সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (২ জুন) প্রজ্ঞা জানায়, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ তামাকমুক্ত করার কৌশল হিসেবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী একটি সহজ তামাক কর কাঠামো প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাকজাত পণ্যের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস ও তামাক রাজস্ব বৃদ্ধির কথা বলেছেন।

অথচ এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সেসবের তেমন কোনো প্রতিফলন হয়নি।

অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় এখন থেকে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের সর্বনিম্ন মূল্য (নিম্নস্তর) প্রায় ২৭.৭৭ শতাংশ বাড়িয়ে ১৮ টাকার পরিবর্তে ২৩ টাকা, উচ্চ স্তরে ৪৪-৬৯ টাকার পরিবর্তে ৪৫ টাকা বা তার বেশি এবং প্রিমিয়াম স্তর আগের মূল্য অর্থাৎ ৭০ টাকা বা তার বেশি রাখার প্রস্তাব করেছেন।

এই দুই স্তরে সম্পূরক শুল্ক মাত্র ১ শতাংশ বাড়িয়ে যথাক্রমে ৬২ ও ৬৪ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এর ফলে ভোক্তা পর্যায়ে এই দুই স্তরের সিগারেটের মূল্য বাড়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই বললেই চলে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

এতে আরও বলা হয়, তামাক বিরোধীদের দীর্ঘ দিনের দাবি উপেক্ষা করে একক স্তরভিত্তিক কর কাঠামো প্রতিষ্ঠার কোনো নির্দেশনা বাজেট ঘোষণায় প্রতিফলিত হয়নি। ফলে বিভিন্ন স্তরের সুবিধা নিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলোর রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ অব্যাহত থাকলো। একই সাথে ভোক্তাদেরও স্তর পরিবর্তনের সুযোগ থাকলো।

বিজ্ঞপ্তিতে বিড়ি এবং ধোঁয়াবিহীন (জর্দা ও গুল) তামাকপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগের প্রশংসা করে প্রজ্ঞা।

বিড়ির স্বাস্থ্য ক্ষতির ভয়াবহতা এবং এই খাতে নিয়েজিত শ্রমিকের সংখ্যা অতি নগণ্য এই বাস্তবতা অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় স্বীকার করেছেন। তামাক বিরোধীরাও দীর্ঘদিন একই কথা বলে আসছিলো।

বাজেটে ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকার বিড়ির প্রতি প্যাকেটের সম্পূরক শুল্কের হার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। আর ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার বিড়ির প্রতি প্যাকেটের সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে।

এছাড়া বিড়ির মূল্য আরো বৃদ্ধি করার জন্য ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকার বিড়ির ভিত্তিমূল্য বাড়িয়ে ৭.১০ টাকা করা হয়েছে এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার বিড়ির ভিত্তিমূল্য বাড়িয়ে ৭.৭৫ টাকা করা হয়েছে।

এতে ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকার প্যাকেটের দাম হবে সাড়ে ১০ টাকা আর ২০ শলাকার প্রতি প্যাকেটের দাম হবে ১২ টাকার একটু বেশি। উভয় ধরনের বিড়ির ক্ষেত্রে এই মূল্য বৃদ্ধি প্রায় ৫০ শতাংশ। এটা যথেষ্ট না হলেও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি, যোগ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর বৃদ্ধি করা হয়েছে জর্দ্দা ও গুলের উপর। গত ২ বছর পর এ দু’টি তামাকপণ্যের উপর সম্পূরক শুল্কের হার ৬০ থেকে বাড়িয়ে ১শ’ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়াও পণ্য দুটির আমদানি শুল্কও ১শ’ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এগুলো প্রশংসনীয় উদ্যোগ হলেও এর সুফল পাওয়া যাবে- যখন এসব পণ্যে ‘স্পেসিফিক’ কর আরোপ করে দাম বাড়ানো হবে। সম্পূরক শুল্ক যতই বাড়ানো হোক না কেন, ভিত্তিমূল্য কম হলে বাজারে এসব পণ্যের মূল্য খুব একটা পরিবর্তন হয় না।

প্রজ্ঞা জর্দা ও গুলের উপর প্রযোজ্য কর আহরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া আহ্বান জানায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৬
এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।