ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

বইমেলায় কামরুজ্জামান কামুর কবিতা সংগ্রহ

তানিম কবির, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
বইমেলায় কামরুজ্জামান কামুর কবিতা সংগ্রহ

বইমেলা থেকে: অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ‘লোক’ প্রকাশ করেছে ‘কামরুজ্জামান কামুর কবিতা সংগ্রহ’। ১৯২ পৃষ্ঠার এই সংগ্রহে স্থান পেয়েছে কামুর প্রকাশিত ছয়টি বইয়ের কবিতা।

বইগুলো হলো- কবি মুখপত্রহীন, অহেতু গুঞ্জনমালা, মামুজির নৌকায়, তুনির কবিতা, নিগার সুলতানা ও চেয়ে আছো।
 
কবিতা সংগ্রহের প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। বিনিময় মূল্য ৩০০ টাকা।   পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে- লোকের স্টলে।
 
কামরুজ্জামান কামুর কবিতা সম্পর্কে প্রথম আলোর মন্তব্য: ‘কামুর কবিতা দাঁড়িয়ে থাকে শব্দের অন্বয়ের মোচড়ের ওপরে। কামুর কবিপ্রতিভা স্ফূর্তি পায় অন্বয়-কল্পনার অজস্রতায়। বাঁকিয়ে দেয়া শব্দসন্ধির ভেতর থেকে স্নায়ুতন্ত্রটিকে তিনি ছড়িয়ে দেন, আস্তে আস্তে, স্তরে স্তরে, পুরো কবিতার ভেতর। এছাড়া তার কবিতাকে অলংকারহীনই বলতে হয়। অন্তত সাদা চোখে তো মনে হয় তার বাক্য সরল, বা আরো একটু এগিয়ে বললে, উত্থানরহিত। পড়তে গেলে তার অন্বয়ের ফাঁদে পড়ে অবধারিতভাবে খাবি খান পাঠক। আটপৌরে বাক্যই তখন হয়ে ওঠে ইশারাবহুল, সাদাকালো আবহমণ্ডল ভরে ওঠে বর্ণচ্ছটায়, অতিতুচ্ছ ঘটনাখণ্ডে উন্মীলিত হয় সৌরপৃথিবীর মর্ম। ’
 
কামরুজ্জামান কামুর কবিতা ও কবিতা সংগ্রহের ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের কবি গৌতম চৌধুরী বলছেন, ‘গত প্রায় দুই দশক ধরে রচিত কবির পাঁচটি কবিতার বই থেকে বেশকিছু কবিতা এখন এক লপ্তে পড়ে বোঝা গেল, বাংলা কবিতা থেকে জীবনানন্দের ভূত নেমে যাওয়ার সময় হলো। এবং কামু সেই উত্তর-জীবনানন্দ বাংলা কবিতার একজন আগুয়ান পথিকৃৎ। ’
 
তবে কামরুজ্জামান কামুর মতে, ‘..আজও আক্ষরিক অর্থে বাংলা কবিতার যে কাল বয়ে চলেছে তা জীবনানন্দেরই কাল। আমরা যারা মাকাল হয়ে লম্ফঝম্ফ করি, তারা কেউই বরিশালের এই নচ্ছার লোকটাকে লঙ্ঘন করে উঠতে পারিনি। ’
 
‘..ফলে বড় কবি-ছোট কবির ভেদ আমাকে ভারাক্রান্ত করে। এইকালে জীবনানন্দ ছাড়া আর কেইবা ততো বড় কবি!”—যুবক কবিদের প্রতি কামুর প্রশ্ন।
 
নতুন লিখতে আসা তরুণ কবিদের ওপর ইউরোপীয় কবিদের প্রভাব সম্পর্কে মন্তব্য করে কামু বলেন, ‘জীবনানন্দসহ তিরিশের কবিরা ইউরোপের যেই কবিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আধুনিক বাংলা কবিতার জন্ম দিয়েছেন, আজকের তরুণতম কবিও যখন সেই সমস্ত ইউরোপীয় কবিকে আওড়াতে আওড়াতে কবিতা লেখেন, আর দম্ভে ‘ঠ্যাং’ আকাশে তুলে রাখেন, তখন বড়ই শ্রদ্ধা জাগে মনে। ’ সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওড়ালে সমস্যা নেই। কিন্তু নিজের রচনায় প্রভাবের উৎস না বদলালেও কবিতা বদলাবে- তাদের এমন ভাবনার আসলে কোনো তাৎপর্য নেই। ’
 
কবিতা ও ব্যক্তি কামু সম্পর্কে লেখক আনিসুল হকের মন্তব্যটা এরকম: ‘একটা ভঙ্গি, একটা কায়দা, একটা সুর, একটা ফিকির, একটা রকম আছে- এখন সেটা ক্ষমতাসীন- যে এই রকম করে লেখো যদি, তাহলে কবিতা। নয়তো হয় নি। তো আমাদের কামুকে নিয়ে কী যে হইচই পড়ে গেল- বলল এসে গেছে আমাদের কবি, যার জন্য বঙ্গভাষা অপেক্ষা করছিল। ..কিন্তু কামরুজ্জামান কামুর ঘাড় ত্যাড়া। তিনি বললেন, আরে তোমরা যেমনটা যেমনটা চাও আমি তেমনটা তেমনটা লিখব? আমি আমার মতো করে লিখব। দরকার হলে তোমরা যেমনটা চাও না, আমি তেমনটা তেমনটা করে লিখি তো, দেখি কী হয়!’
 
যেনো বা আনিসুল হকের এমন মন্তব্যের জবাবেই কামু বললেন, ‘..এই মন আমি কাহারে দেখাই! এই মন যে তব আধুনিক ছাতার তলে দাঁড়াইতে চাহে না। এই মন খালি ইতিউতি করে। ’
 
কামরুজ্জামান কামুর জন্ম ১৯৭১ সালের ৩১ জানুয়ারি। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানায় বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের রামধন গ্রামে। তিনি বলেন, ‘বাংলার কত গায়ক-সাধক-কবি গণমানুষের হৃদয়ের গান গেয়েছেন। কী বিপুল সেই ভাণ্ডার! আরো কত না কবি ফুরিয়ে গেছেন পথে প্রান্তরে ঘুরে ফিরে। যার বাণী হয়তো কোনো লিপিরই আওতাধীন হয়ে উঠতে পারেনি। ’
 
তাদেরই একজন হয়ে না-ওঠার চাপা আক্ষেপে যেন কামু বললেন, ‘ইউরোপীয় শিক্ষার আলোর বাইরে বাংলার এই যে বিপুল অন্ধকার, আমি কেন সেই অন্ধকারেরই কবি হলাম না! এই অন্ধকার যে আমার নিজের আলো, আমার দেমাগ কেন সেই উপলব্ধির গহনে হারালো না! আমি কেন হীনম্মন্য মধ্যবিত্তের কবি হতে গিয়ে এই সবেধন নীলমণির অপচয় করলাম!’
 
কামরুজ্জামান কামুর কবিতা সংগ্রহসহ ঘরে বসে বইমেলার যেকোনো বই পেতে ভিজিট করুন rokomari.com-এ। অথবা কল করুন 16297 নম্বরে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
টিকে/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।