ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

ব্যাচেলর স্টাফ কোয়ার্টারে টং দোকানীদের বইমেলা

তানিম কবির, বিভাগীয় সম্পাদক শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৫
ব্যাচেলর স্টাফ কোয়ার্টারে টং দোকানীদের বইমেলা ছবি: আনন্দ/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অমর একুশে গ্রন্থমেলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বাংলা একাডেমির গেট সংলগ্ন ব্যাচেলর স্টাফ কোয়ার্টারের টং দোকানগুলো।

মেলায় আগত পাঠক-ক্রেতা-দর্শনার্থী থেকে শুরু করে লেখক-প্রকাশক বা মিডিয়াকর্মী—বইমেলা করার বিরতিতে ব্যাচেলর স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে এসে দুটি পাকুরা ‘উইথ’ একটি চায়ের অর্ডার দেননি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল।



শাহবাগ মোড়, টিএসসি বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টং দোকানগুলোর মত সারা বছর ধরে জমজমাট থাকার সুযোগ নেই এ দোকানগুলোর—যেহেতু বইমেলা ছাড়া বছরের অন্যান্য সময় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণকে ঘিরে লোকসমাগমের বিশেষ কোনও উপলক্ষ তৈরি হয় না।

ব্যাচেলর স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতর সারা বছর চা দোকানদারি করেন শাহ আলম।   শুধু বইমেলা চলাকালে ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে পাকুরা, পুড়ি, আলুর চপ ও ডিমের চপ নিয়ে তাঁর বর্ধিত ব্যবসা।

সেই সূত্রেই মেলায় আগত ‘কাস্টোমারদের’ চাপ সামালাতে গিয়ে প্রতিবছরই রীতিমত হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। আর নিয়োগ করতে হয় একাধিক পুড়ি পাকুরার কারিগর।

আশ্চর্য হলেও সত্য, ‘বইমেলা উপলক্ষে বেচাবিক্রি কেমন’—এই প্রশ্নের জবাবের জন্য শাহ আলমের শিড্যুল পেতে এই প্রতিবেদককে দুটি বিকেল অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্যস্ততার ফাঁকেও খানিকটা সময় ‘ম্যানেজ’ করে তিনি কথা বলতে রাজি হন।

জানান, সারা বছর এই একটি সময়ের জন্যই অপেক্ষা করে থাকেন। তবে পুরো কার্যক্রমকে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক বলতে বা ভাবতে রাজি নন তিনি। বরং নিজেকে বইপ্রেমী মানুষদের সেবায় নিয়োজিত একজন ভাবতে পছন্দ করেন শাহ আলম।

অন্যসময় বাংলা একাডেমির গেটের কাছে পান বিড়ির দোকান চালালেও মেলা চলাকালীন ব্যাচেলর স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতর ঠাঁই নিতে হয় দোকানদার আব্বাস ও কামালকে। দৃশ্যত আউটডোর থেকে ইনডোরে অধঃপতিত হলেও, বেচা-বিক্রির দিক থেকে লাভবান বৈ ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় না তাঁদের।

মেলার এ সময়কে কেন্দ্র করে পানি, কোমল পানীয়, চিপস ও মিনি প্যাকেটের বিস্কুট নিয়ে তাঁদের থাকে আলাদা প্রস্তুতি।

আর এতসব হৈ হট্টগোলে পড়ে কোয়ার্টারের বাসিন্দাদের ‘প্রাইভেসি’ বিঘ্নিত হয় কিনা জানতে চাইলে উক্ত কোয়ার্টারে বসবাসকারী এক কর্মচারী বলেন, আমাদের এসব সহ্য হয়ে গেছে। এ মাসে একটু হৈ হট্টগোল না হলেই বরং খালি খালি লাগবে।

এছাড়াও তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে টং দোকানগুলোতে যে পরিমাণ ব্যবসা হয়—তার কিছু অংশ স্টাফ কোয়ার্টার মসজিদের উন্নয়নের জন্য দিয়ে দেন দোকানদাররা। ফলে, ব্যাপারটা পুরোপুরি একতরফাও নয়।

কিন্তু এসব মন্তব্যে নিজের নাম ব্যবহারের প্রশ্নে কিছুতেই রাজি হননি এই কর্মচারী।

বাংলাদেশ সময়: ০১১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।