ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

বইমেলায় জয়নুল জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৪
বইমেলায় জয়নুল জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা থেকে: শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্মরণে ‘জন্মশতবার্ষিকীর আলোছায়ায় জয়নুল আবেদিন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেল চারটায় বইমেলার একুশে মঞ্চে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।



অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্প-সমালোচক আবুল হাসনাত। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আবুল মনসুর, সৈয়দ আজিজুল হক, সাজ্জাদ শরিফ ও ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান। সভাপতিত্ব করেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী।

প্রাবন্ধিক আবুল হাসনাত বলেন, জয়নুল ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ চিত্রমালা অঙ্কনের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষে খ্যাতিমান শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ তাঁর শিল্পীসত্তাকে প্রবলভাবে নাড়া দেয়। তিনি

দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের বেঁচে থাকার আকুতিকে মোটা তুলিতে যেভাবে রূপায়িত করেছিলেন তার কোনো তুলনা নেই। এই চিত্রমালা একদিকে মানবিক বিপর্যয়ের আশ্চর্য দলিল হয়ে আছে, অন্যদিকে এই চিত্রমালা অঙ্কনের মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে
উঠেছেন একজন আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিমান শিল্পী।

তিনি আরো বলেন, বিগত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে জয়নুলের সৃষ্টিতে লোকশিল্পের আত্তীকরণ ও আধুনিক বোধের যে প্রকাশ আমরা পর্যবেক্ষণ করি তা শুধু মনোজ সুষমামণ্ডিত নয়, এদেশের চিত্রকলায় নবধারাও বটে।

এ-ধারার আধুনিকায়নের যে অভিব্যক্তি, আমরা মনে করি বাংলাদেশের চিত্রশিল্পের বিশিষ্টতা, চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্যের শনাক্তকরণের শক্তিশালী প্রকাশও বটে।

বিশিষ্ট এ প্রাবন্ধিক বলেন, শতবার্ষিকীর আলোছায়ায় আচার্য জয়নুল আবেদিনকে বিচ্ছিন্নভাবে নয়, সামগ্রিকভাবে পর্যালোচনা প্রয়োজন। তার সৃষ্টি, তার ব্যক্তিত্ব, লোকশিল্প ও ঐতিহ্যভাবনা এবং দেশআত্মার মর্মবেদনা ও সংকট উত্তরণের জন্য তার ভাবনাকে নিয়ে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে চর্চা হওয়া বাঞ্ছনীয় বলে আমরা মনে করি।

সভাপতির বক্তব্যে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, জন্মশতবর্ষে জয়নুল আবেদিনের জীবন ও শিল্পকর্মের দিকে নতুন করে ফিরে তাকাতে হবে। কারণ জয়নুল আবেদিনের বিচিত্র শিল্পসৃষ্টির নানা ধারার মূল্যায়নই পারে উত্তর প্রজন্মের‍ শিল্পীদের মাঝে তার অঙ্গীকারঋদ্ধ শিল্পীমানসের যোগাযোগ ঘটাতে।

আলোচনা সভায় দর্শক সমাগম কম থাকলেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহের ম‍ূল আকর্ষণে পরিণত হয় এ অনুষ্ঠান।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন দেশের বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী দিল আফরোজ রেবা, দিলরুবা খান, চন্দনা মজুমদার, মীনাবড়ুয়া, আবুবকর সিদ্দিক, পাগলা বাবুল, মো. নূরুল ইসলাম, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, অনিমা মুক্তি গোমেজ, পল্লবী সরকার মালতী এবং এনামুল হক।

যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বেণু চক্রবর্তী (তবলা), হাসান আলী (বাঁশি), নির্মল কুমার দাস (দোতারা), নাজমুল আলম খান (মন্দিরা) এবং আবদুস সোবহান (ঢোল)।

এদিকে আগামীকাল একুশে মঞ্চের অনুষ্ঠানসূচি ঘোষণা করেছে বাংলা একাডেমি। সোমবার বিকেল  চারটায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আবদুস সবুর খান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, ফরীদ উদ্দীন মাসউদ, আমিনুর রহমান সুলতান, এ.এস.এম বোরহান উদ্দীন।

সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। সন্ধ্যায় পরিবেশিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।