ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

মায়ের ভাষাকে ভালোবেসে বইমেলায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
মায়ের ভাষাকে ভালোবেসে বইমেলায় বই পড়ছে এক শিশু। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: মহান একুশের চেতনায় সৃষ্ট অমর একুশে বইমেলা। আজ ২১ ফেব্রুয়ারি তাই বইমেলাজুড়ে ভাষার আবেশ।

বর্ণমালা খচিত পোশাকে নিজেদের সাজিয়ে মেলায় আসছেন সব বয়সী মানুষ। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়া অকুতোভয় বীরদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা শেষে জনতার ঢল আছড়ে পড়ছে বইমেলায়।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার দ্বার খোলে সকাল ৮টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এই পুরো সময়টাতেই ঢাকা ও ঢাকার বাইরের মানুষ বইমেলায় ছুটে আসবেন। আজকের দিনে পাঠকদের প্রিয় সব লেখকরাও মেলায় আসবেন। পাঠকদের হাতে তুলে দেবেন অটোগ্রাফসহ বই।

মেলা প্রাঙ্গণে বইপ্রেমী আবিদা খানক বলেন, একুশে স্মরণে বাংলা একাডেমীর বইমেলা বাঙালির কাছে যেন একুশের সমার্থক। শহীদ বেদিতে ফুল অর্পণ আর বইমেলায় এসে বই কেনা এখন ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই শহীদদের আত্মদানকে সমৃদ্ধ ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠনের প্রত্যয় নিয়েই একুশের প্রহরে বইমেলায় আসা।

আজ প্রভাতফেরির পর থেকেই ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে মা-বাবা, ছোট ভাই-বোনকে নিয়ে বড় ভাই-বোন বইমেলা প্রাঙ্গণকে ভরিয়ে তুলেছে। মেলায় তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো।

বইমেলায় আজকের দিন পেরুলে সময় আর মাত্র এক সপ্তাহ। তাই মেলায় এখন বই কিনবেন এমন পাঠকদের সংখ্যাই বেশি। ২১ ফেব্রুয়ারি সেদিক থেকে কিছুটা ভিন্ন। এদিন প্রচুর মানুষের সমাগম হলেও সে তুলনায় বিক্রি কমই হয়। তবে মেলায় বই বিক্রির যে মৌসুম সেটি মূলত আজকে থেকেই শুরু হবে এবং তা মেলার শেষ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

এদিন শহীদ মিনার থেকে বইমেলায় আসেন বিভিন্ন দেশের নাগরিকও। শহীদ দিবসে মানুষের ঢল দেখে অভিভূত হয়েছেন তারা। বাঙালির ভাষাপ্রেম দেখে হয়েছেন উদ্দীপিত। তেমনি একজন জাপানের ওয়াতানাবি।

কথা হলে তিনি বলেন, বাঙালির ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের বীরত্বপূর্ণ গল্পে চোখ ভিজে উঠে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট নিয়ে পড়তে গিয়ে আমার চোখ ভিজে উঠেছে। মাতৃভাষার জন্য যে জাতি রক্ত ঝরিয়েছে, সে জাতিকে খুব কাছ থেকে দেখছি। ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে ইংরেজি ভাষায় রচিত কোনো বই পেলে আমি কিনব। এত বড় বইমেলা, সত্যি কোথাও দেখিনি আমি। লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে ফুল দেওয়া আর বাংলাদেশের বইমেলা দেখে আমি অভিভূত।

নয়াপল্টন থেকে আসা দর্শনার্থী আবু হাসান বলেন, প্রতিবছরই মেলায় আসা হয়। আজকেও এসেছি বই কেনার জন্য। সেসঙ্গে আজকে ২১ ফেব্রুয়ারি। ঢাকায় আমরা যারা পড়ালেখা করছি এই মেলার মাধ্যমে সবাই একসঙ্গে হবো, মেলাও ঘুরে দেখা হলো। সঙ্গে বইও কেনা হলো। প্রাণের এ বইমেলায় বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে এটাও কম পাওয়া নয়। আজকে তো আমাদের ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন।

আজ অমর একুশে উপলক্ষে মেলা শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল থেকে শুরু হয়েছে বইপ্রেমীদের আনাগোনা। স্টলে স্টলে ঘুরে বইয়ের মলাট উল্টে দেখে কিনে সুন্দর সময় পার করছেন তারা। প্রতিবছরের মতো এবারও শিশুদের বই নিয়ে আলাদা ‘শিশু চত্বর’ রাখা হয়েছে। মেলায় শিশুদের আধিক্য দেখা গেছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাঠকদের উপস্থিতি আরও বাড়বে বলে আশা লেখক-প্রকাশকদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।