ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

রাজশাহীতে বিএনপি নেতার মৃত্যু, খুন না আত্মহত্যা ধন্দে পুলিশ

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
রাজশাহীতে বিএনপি নেতার মৃত্যু, খুন না আত্মহত্যা ধন্দে পুলিশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী জেলা বিএনপির সহসভাপতি খন্দকার মাইনুল ইসলামের (৬১) রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

রাজশাহী: রাজশাহী জেলা বিএনপির সহসভাপতি খন্দকার মাইনুল ইসলামের (৬১) রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এটি খুন, না আত্মহত্যা তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে পুলিশ।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরের এ ঘটনার পর র‌্যাব, পিবিআই, সিআইডি ও ডিবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

তবে খন্দকার মাইনুলের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সংস্থাগুলো প্রাথমিক কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।

ঘটনার পর মহানগরীর হোসনিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস মোড়ের ওই বাড়ি থেকে তার ব্যবহৃত লাইসেন্স করা পিস্তল ও তাতে থাকা তিন রাউন্ড গুলি ও তিনটি গুলির খোসাসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা।

তবে যেখানে মাইনুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই পরিবারের সদস্যরা সেখানকার রক্ত ধুয়ে ফেলায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া মাইনুলের পায়ের স্যান্ডেলটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০ গজ দূরে ফুলের বাগানের একটি টবের কাছ থেকে পাওয়া গেছে। এই বিষয়টি নিয়েও উঠেছে নানান প্রশ্ন।

রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শরীফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ফায়ার স্টেশনের পাশেই খন্দকার মাইনুল ইসলামের বাড়ি। তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এমন কথা বলে ওই বাড়ির লোকজন তাকে তুলে স্টেশনের গেটে নিয়ে আসেন।

পরে ১টা ৫০ মিনিটে তাকে স্টেশনের অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নামিয়ে দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সটি ফিরে এসেছে। গুলিবিদ্ধের ঘটনায় এর চেয়ে তারা আর কিছুই জানেন না।

রামেক হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) ডা. আরিফুল হক বাংলানিউজকে জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনার আগেই খন্দকার মাইনুলের মৃত্যু হয়। তার দুই কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিলো। তবে মরদেহের ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে বলা যাবে না।

রামেক হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, খন্দকার মাইনুলের মাথার ডান পাশের কানের নিচে দিয়ে পিস্তলের গুলি ঢুকে বাম দিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে। দেখে মনে হয়েছে কাছ থেকে বা ঠেকিয়ে গুলি করা হয়েছে। তাকে আনার সময় সেখান থেকে রক্ত ঝরছিলো।  

এদিকে, হাসপাতালে নেওয়া পর জেলা বিএনপি নেতা খন্দকার মাইনুলের ছেলে লেমন সাংবাদিকদের জানান, অনেক বেশি ঋণগ্রস্ত থাকায় তার বাবা বেশ কিছুদিন ধরেই দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। আর্থিক সমস্যা ছাড়া তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ ছিলেন। এরই মধ্যে কয়েকবার স্ট্রোকও হয়েছে তার। সব মিলিয়ে তিনি অবসাদগ্রস্ত ছিলেন।

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, খন্দকার মাইনুল ইসলাম জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ছাড়াও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদারও ছিলেন। রাত ৯টায় তার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে।   পরে তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা। সিআইডি বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর রহস্যটি উন্মোচন হতে পারে। সেই পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে।  

বর্তমানে এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অন্য কিছু পাওয়া গেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি।  

উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে বাড়িতে নিজের লাইসেন্সকৃত পিস্তলের গুলিতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় রাজশাহী জেলা বিএনপির সহ সভাপতি খন্দকার মাইনুল ইসলামের।

**রাজশাহীতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬

এসএস/এএটি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।