ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

চলছে বিএনপির কমিটি কমিটি খেলা!

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৯ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৬
চলছে বিএনপির কমিটি কমিটি খেলা!

ঢাকা: গত ১১ এপ্রিল বিএনপির প্রেসউইং থেকে ফোন করে সাংবাদিকদের জানানো হয়, ১২ এপ্রিল সকাল ১১টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুর ইসলাম আলমগীর।
 
মিডিয়ায় খবরটি ছড়ানোর পর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সাংবাদিকদের ফোন দিয়ে জানতে চান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটি ঘোষণা করবেন কি না?
 
পরের দিন সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাতে প্রচুর ফোন পেয়েছি।

সবাই জানতে চান, স্থায়ী কমিটি ঘোষণা করব কি না? আমি আপনাদের একটু হতাশই করছি। আজ স্থায়ী কমিটি ঘোষণা করা হবে না। অন্য বিষয় নিয়ে কথা বলব।

এর কয়েকদিন পর ফের জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন মির্জা ফখরুল। গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক শফিক রেহমানের গ্রেফতার নিয়ে কথা বলেন তিনি।

কিন্তু ওই সংবাদ সম্মেলনের আগমুহূর্ত পর্যন্ত বিএনপির নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভাকাঙ্ক্ষী ও রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা মনে করেছিলেন দলের সর্বচ্চো নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণার জন্যই জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নয়াপল্টনে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর প্রাত্যহিক প্রেস ব্রিফিং নিয়েও গত দেড় মাস ধরে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ ও অস্থিরতা থাকলেও স্থায়ী কমিটি ঘোষণা করছেন না খালেদা জিয়া। বিষয়টিকে ‘কমিটি’ ‘কমিটি’ খেলা হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত সপ্তায় গুলশান কার্যালয় থেকে ১৯ সদস্য বিশিষ্টি স্থায়ী কমিটর চূড়ান্ত তালিকার কম্পিউটার প্রিন্ট আউট খালেদা জিয়ার বাসায় পৌঁছানো হয়।

যাচাই-বাছাই শেষে কম্পিউটার প্রিন্ট আউট দেওয়ার জন্য চূড়ান্ত তালিকা গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়াই পাঠিয়েছিলেন। বিশেষ খামে সিলগালা করে পাঠানো ওই তালিকার প্রিন্ট আউট শেষে আবারও সিলগালা করে খালেদা জিয়ার বাসায় পৌঁছানো হয়।

ফলে গুলশান কার্যালয়ের কম্পিউটার সেকশনের বিশ্বস্ত লোক ছাড়া ওই তালিকায় কার কার নাম আছে, তা জানেন না কেউ।

সূত্রমতে, আগের কমিটির শূন্য দু’টি পদে আব্দুল্লাহ আল নোমান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং পুনর্বিন্যাস্ত দু’টি পদে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও সেলিমা রহমানকে রেখে সাজানো হয়েছে ১৯ সদস্য বিশিষ্টি স্থায়ী কমিটি।

এর দুইদিন পর একই প্রক্রিয়ায় গুলশান কার্যালয় থেকে ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট ভাইস চেয়ারম্যান’র চূড়ান্ত তালিকা কম্পিউটার প্রিন্ট আউট দিয়ে খালেদা জিয়ার বাসায় পাঠানো হয়।

স্থায়ী কমিটি ও ভাইস চেয়ারম্যানের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা ধারণা করেছিলেন, চলতি সপ্তায় এ দু’টি কমিটি ঘোষণা করবেন খালেদা জিয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি কারণে কমিটি ঘোষণা আটকে গেল- সেই উত্তর বিএনপির সিনিয়র কোনো নেতার কাছে আপাতত নেই।

সূত্রমতে, স্থায়ী কমিটি ও ভাইসচেয়ারম্যানের তালিকা তৈরি হওয়ার পর বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের তালিকা তৈরির কাজ করছেন খালেদা জিয়া। উপদেষ্টা পরিষদ চূড়ান্ত হলে স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা পরিষদের নাম এক সঙ্গে ঘোষণা করবেন তিনি।

আবার কেউ কেউ বলছেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির নাম ঘোষণার পর স্থায়ী কমিটি ও দলের উপদেষ্টা পরিষদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। কারণ, এ দু’টি কমিটি কর্মকর্তা ও সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বাইরে।
 
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কমিটি গঠনের পূর্ণ দায়িত্ব ম্যাডামের ওপর অর্পণ করেছেন সম্মানিত কাউন্সিলররা। এখন ম্যাডামই বলতে পারবেন কমিটি ঘোষণা কেন দেরি হচ্ছে। আমার মনে হয় নির্বাহী কমিটি দেওয়ার পর স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণা করবেন তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৬ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৬
এজেড/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।