ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

কৃষিব্যাংকের লোকসান ১০০০ কোটি টাকা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৭
কৃষিব্যাংকের লোকসান ১০০০ কোটি টাকা! কৃষিব্যাংকের লোগো্

ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত কৃষিব্যাংক বিগত বছরগুলোর মত এবারও লোকসানের বৃত্তেই ঘুরপাক খেয়েছে। বছর শেষে কৃষিব্যাংকের নিট লোকসানের পরিমাণ পাহাড়সমান----প্রায় ১০০০ কোটি টাকা।

৩০ জুন ২০১৭ স্থিতিভিত্তিক বার্ষিক হিসাব বিবরণীতে প্রদর্শিত লোকসান, প্রভিশন ঘাটতি ও স্ফীত আয় মিলে এই লোকসান হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এজন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে লাভ-ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে হিসাব করার লক্ষ্যে প্রভিশন খাতে ঘাটতি এবং আয় স্ফীতকরণ সংক্রান্ত তথ্যগুলো আমলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কৃষিখাতে (কৃষকদের) অর্থায়নে ব্যাংকের বিশেষ অবদান রয়েছে। ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য লাভ করা নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির ৪৩টি শাখা পরিদর্শন করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের নথি মোতাবেক চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ (কর্মচারী-ঋণ বাদে) ১৮,৩১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বিপরীতে ২,৪৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা প্রভিশন সংরক্ষণের কথা থাকলে সংরক্ষিত প্রভিশনের পরিমাণ ২৫২৬ কোটি ৭ কোটি টাকা। বেশি সংরক্ষণ করা হয়েছে ৯০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় কর্মকর্তারা ৪৩টি শাখায় ৪২৯৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণ ও অগ্রিমের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের পরিমান দেখতে পেয়েছেন ১,২৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। এসব শাখায় ঋণের বিপরীতে ১,৩১৬ কোটি ২ লাখ টাকা সংরক্ষণ কর‍ার থাকলেও কম রাখা হয়েছে ২০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

ব্যাংকটির অন্যান্য খাতের সম্পদের পরিমাণ ১৮০২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে এক বছর বা তার বেশি সময়ে ধরে অসমন্বিত দফাসমুহের বিপরীতে ১০৩৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকরণ করেছে পরিদর্শন দল। উল্লেখিত খাতে একই পরিমাণ অর্থ প্রভিশন সংরক্ষণ করার কথা থাকলেও রক্ষিত আছে ৫৭০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এখাতে প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ৪৬৩ কোটি ৪লাখ টাকা। ঋণ ও অগ্রিমের উদ্বৃত্ত প্রভিশন ৬৯ কোটি ৪৭ লাখ বাদ দিলেও প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ৩৯৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

পরিদর্শন করা ৪৩টি শাখার আয় দেখানো হয়েছে ১১৪৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। অথচ এসব শাখা পরিদর্শনকারীরা আয়ের পরিমাণ পেয়েছে ১১৪২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ঋণ ও অগ্রিমের উপর আরেপিত সুদ সঠিক ভাবে হিসাব না করে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা স্ফীত আয় দেখানো হয়েছে। ব্যাংকটির অন্যান্য শাখার আয়ের তথ্য যাচাই করলে মোট আয়ের পরিমাণ পরিমান কমে যাবে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের বার্ষিক হিসাব বিবরণীতে লোকসানের পরিমাণ ৫৮৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এই লোকসানের সঙ্গে প্রভিশন খাতের সমন্বিত ঘাটতি ৩৯৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, স্ফীত আয় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা যোগ করা হলে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯৮১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

এবিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ কৃষিব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, নিয়ন্ত্রক হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে যেসব অসঙ্গতি বের করেছেন আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী সেসব হিসাব ঠিকঠাক করে নেবো।

তিনি আরও বলেন, কৃষিব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু লাভ করা নয়। গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কৃষিখাতে অর্থায়নে কৃষিব্যাংকের বিশেষ অবদান রয়েছে। বিশেষ করে কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে।
বাংলাদেশ সময়:১৯০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর: ৩০, ২০১৭
এসই/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।