ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

বিমানবন্দরে ভিআইপিদের প্রটোকল মানার নির্দেশনা

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
বিমানবন্দরে ভিআইপিদের প্রটোকল মানার নির্দেশনা ছবি: ফাইল ফটো

ঢাকা: দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভিভিআইপি ও ভিআইপি যাত্রীদের নিরাপত্তা প্রটোকল মানার নির্দেশনা দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। নিরাপত্তার স্বার্থে ভিআইপিদের প্রটোকলে নিয়োজিত লোকেরা যেন বিমানবন্দরের বোর্ডিং ব্রিজ এলাকা অতিক্রম না করেন সেজন্য সরকারের সকল মন্ত্রীকেও দাপ্তরিক চিঠি দেওয়া হয়েছে।



গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংস্থায় এ সংক্রান্ত নির্দেশনার চিঠি পৌঁছে দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বিমানবন্দরসমূহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং কেপিআই (কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন) হিসেবে বিবেচিত। প্রতিটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্ন্তজাতিক তথা জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিমানবন্দর সমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্রমাগত আপডেট করা হয়। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা কর্তৃক সময়ে সময়ে নিরাপত্তা বিষয়ক বিধিবিধান যথাযথ বাস্তবায়ন করা সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্য আবশ্যক। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মিশরে রাশিয়ার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা, ফ্রান্স ও মালিতে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বিষয়ে সবার আরও মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
 
চিঠিতে মন্ত্রীদের জানানো হয়, বাংলাদেশ থেকে কেবল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নয়, অন্য এয়ারলাইন্সগুলোর যেসব উড়োজাহাজ বাংলাদেশ ত্যাগ করে, গন্তব্য পর্যন্ত এর নিরাপত্তার বিষয়টি ডিপার্টিং দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ওপর বর্তায়। এছাড়া, ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর জন্যও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ক্যাটাগরি-১ এ উন্নীত করার জন্য প্রায় সকল কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। এক্ষেত্রেও নিরাপত্তার ইস্যুটি গুরুত্বপূর্ণ।
 
বিমানবন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে মন্ত্রী, সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর ব্যবহারকারী যাত্রীরা যে সহযোগিতা করছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাশেদ খান মেনন তার চিঠিতে বলেন, বিদেশি বিমানবন্দরের সব নিয়ম মানলেও কখনও কখনও অল্পসংখ্যক ভিআইপি যাত্রী এদেশে নিয়ম মানতে চান না। তাদের সঙ্গে আসা লোকজন বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের অনুরোধ উপেক্ষা করেন। বিমানবন্দরে তাদের প্রবেশ করতে দেওয়ার জন্য এবং বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় থাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটি সমস্যা সৃষ্টি করে। বিমানবন্দরে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যা ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দিয়ে সংসদের মাধ্যমে সকলকে অবহিত করা হয়েছে।
 
চিঠিতে বলা হয়, ভিআইপি যাত্রীদের জন্য সবরকম সুবিধা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে ভিআইপি যাত্রীদের বিমানবন্দরে প্রস্থান বা আগমনের সময় সর্বোচ্চ একজন সঙ্গী বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু ওই সঙ্গী কোনোভাবেই বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীকেও বিষয়টি সর্ম্পকে ইতোমধ্যে অবহিত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ৫ জানুয়ারি দেশের বিমানবন্দরগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আব্দুর রশিদ ওই সভার কার্যবিবরণী সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠান।

কার্যবিবরণীতে বলা হয়, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিমানবন্দরে কোনো যাত্রীর অভ্যর্থনা বা বিদায়ের কাজে প্রটোকলে নিয়োজিত ব্যক্তি আগমন বা বর্হিগমন উভয়ক্ষেত্রেই ইমিগ্রেশন এলাকা অতিক্রম করবেন না। বিষয়টি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা তার অধীনস্থ কর্মকর্তাদের তা পালন নিশ্চিত করবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পত্রের মাধ্যমে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালনের বিষয়টি অবহিত করবে।
 
এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের সব বিমানবন্দরের ভিভিআইপি বা ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেওয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
এ বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপগুলো জানতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়োজিত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা গ্রুপ ক্যাপ্টেন জাকির হাসানকে ফোন দিলেও কথা বলা যায়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
এমএন/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।