ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

স্বর্ণ চোরাচালানে বিমানের ১০ কর্মকর্তা

ইশতিয়াক হুসাইন ও আদনান রহমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৪
স্বর্ণ চোরাচালানে বিমানের ১০ কর্মকর্তা

ঢাকাঃ দেশের বিমানবন্দরগুলোতে একের পর এক স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আরো ১০ কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তুতকৃত এক তদন্ত প্রতিবেদনে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে এদের ৭ জন এখনো চাকরিতে বহাল।
 
২০১৩ সালের আগষ্ট মাসে বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১২৪ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এঘটনা তদন্তে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খানকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়।
 
কমিটির প্রতিবেদনে স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনায় বিমানের বেশ কিছু কর্মী ও কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়। এরা হচ্ছেন: বিমানের জুনিয়র সিকিউরিটি অফিসার মোঃ কামরুল হাসান, সুইপিং সুপারভাইজার মোঃ আবু জাফর, এয়ারক্রাফট মেকানিক মোঃ মাসুদ, অ্যাসিসট্যান্ট এয়ারক্রাফট মেকানিক মোঃ আনিস উদ্দিন ভুঁইয়া, প্রকৌশল হ্যাংগারের মেকানিক ওসমান গণি, ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসার সালেহ আহমেদ, মজিবর রহমান, জুনিয়র ইন্সপেকশন অফিসার মোঃ শাহাজাহান সিরাজ, রায়হান আলী এবং মাকসুদ।
 
শিগগিরই এদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হবে বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন মইনুল খান। তিনি বলেন, “রিপোর্টটি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের পর একটি মামলা দায়ের করা হবে। মামলার রেফারেন্স হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদনটি দেয়া হবে। পুলিশি তদন্তে এদের গডফাদারদের নাম বের হয়ে আসবে। ”
 
এদিকে এঘটনায় বিমান কর্মকর্তা শাহজাহান সিরাজ এবং মজিবর রহমানকে ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া রায়হান আলী নিজেই ইস্তফা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে বিমানের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা।
 
ওই কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, “কোন তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে নয়, বিমান তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে বলেই বরখাস্ত করেছে। তবে অন্যদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণাদি পাওয়া যায়নি। ”
 
১২৪ কেজি সোনা চোরাচালানের ঘটনার পর শাহজাহান সিরাজসহ কয়েকজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র‍্যাব। চোরাচালানের ঘটনাটি আগে থেকেই ওসমান গনি, সালেহ, মজিবর, রায়হান, মাকসুদ এবং শাহজাহান সিরাজের জানা ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন। তাই তদন্ত প্রতিবেদনে তালিকাভুক্তদের ‘বিশেষভাবে সন্দেহভাজন’ হিসেবে উল্লেখ করে কমিটি।
 
এদিকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এপর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬শ কেজি সোনা উদ্ধারের ঘটনায় মোট ৮২ জনকে আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ‘চোরাচালানের ঘটনা সম্পর্কে বিমানকর্মীরা অবগত ছিলেন’ বলে অধিকাংশ আসামি স্বীকার করেছে বলে বাংলানিউজকে জানান বিমানবন্দর থানার এক কর্মকর্তা।
 
মইনুল খান বলেন, “বিমানের যেসকল স্থান থেকে সোনা উদ্ধার করা হয়, সেখানে বিমানকর্মী ছাড়া কারো প্রবেশের এখতিয়ার নেই। ”
 
তিনি বলেন, “বিমান একটি রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা। অনেক ভিআইপি এবং ভিভিআইপিরা এতে ভ্রমণ করেন। কোন অসাধু চক্রের খপ্পরে পড়ে এসব বিমানকর্মীরা এমন কাজও করে ফেলতে পারে যা ভিআইপি ও ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন, কাস্টমস আইনসহ অন্যান্য আইনে ফৌজদারি মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে। ”
 
বাংলাদেশ সময়ঃ ১৫২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।