ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

বাংলা সাহিত্যে অমর গাঁথা হয়ে থাকবেন আহমদ শরীফ

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৮
বাংলা সাহিত্যে অমর গাঁথা হয়ে থাকবেন আহমদ শরীফ ‘ডক্টর আহমদ শরীফ স্মরণে’ আলোচনা সভা আয়োজন করে জাতীয় জাদুঘর

ঢাকা: বাংলাদেশের সমাজ-সাহিত্য-সংস্কৃতির জগতে আহমদ শরীফ একজন প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের প্রধান ব্যক্তিদের মধ্যে আহমদ শরীফই সম্ভবত একমাত্র ব্যক্তি, যিনি সবার কাছে প্রিয় হওয়ার দুর্বলতাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যের এ সাধককে উপেক্ষা করা যায়, তবে কোনো অবস্থাতেই তার বিশাল কীর্তি অস্বীকার করা যায় না, বলে জানালেন অধ্যাপক নেহাল করিম।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘর ‘ডক্টর আহমদ শরীফ স্মরণে’ একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নেহাল করিম এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকে মৃত্যুর পরবর্তী বছর অবধি বছরে গড়ে দুটো করে আহমদ শরীফের মৌলিক রচনা সংবলিত গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তার রচিত সমাজ, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ওপর শতাধিক মননশীল গ্রন্থ শুধু অপঠিতই নয়, অগোচরেও রয়ে গেছে। একথা উল্লেখ করতেই হচ্ছে যে- তার রচিত ও প্রকাশিত মৌলিক রচনার মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা প্রায়- ১৩ হাজার ৮৪৪।

সেমিনারে ‘ডক্টর আহমদ শরীফ: মনীষা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক আহমদ কবির। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নেহাল করিম।  

আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট লেখক ও চিন্তক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে অধ্যাপক আহমদ কবির আহমদ শরীফের পেশা জীবনের ওপর আলোকপাত করেন।

তিনি বলেন, আহমদ শরীফ ১৯৪৪ সালে ২৫০ টাকার বেতনে গ্রিভেন্সিভ অফিসার হিসেবে দুর্নীতি দমন বিভাগে চাকরির মাধ্যমে পেশাগত জীবন শুরু করেন। তবে তার রক্তের শিরায় প্রবাহিত ছিল শিক্ষকতার নেশা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে যোগ দেওয়ার পিছনে শর্ত ছিল- আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদের বিশাল পুঁথির সম্ভার বিনা অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে হবে এবং এর বিনিময়ে তাকে ওই পুঁথি দেখভালের জন্য নিয়োগ করা হবে।  

অনুষ্ঠানে আলোচক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, দেশ-কাল-সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রথাগত সংস্কার পরিবর্তনের লক্ষ্যে সব সময় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। মানুষের আর্থ-সামাজিক মুক্তিসহ সমাজতন্ত্রের প্রতি ছিল তার প্রচণ্ড আগ্রহ। ভাববাদ, মানবতাবাদ ও মার্কসবাদের যৌগিক সমন্বয় প্রতিফলিত হয়েছে তার চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা, আচার-আচরণে, বক্তব্যে ও লেখনীতে।

সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট লেখক ও চিন্তক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন,  আহমদ শরীফ বড় হয়ে উঠেছিলেন আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের দুর্লভ অমূল্য পুঁথির ভাণ্ডার ও সাময়িক পত্রপত্রিকার সম্ভারের মধ্যে।  

বাংলাদেশ সময়: ০২০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৮
এইচএমএস/এনএইচটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।