ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

চারটি কবিতা | বীরেন মুখার্জী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
চারটি কবিতা | বীরেন মুখার্জী

মহাকাল
অন্ধকার;
সত্য শুধু, আলোর জিজ্ঞাসা
বাকি সব-
অন্ধকার।


নিজেকে মুঠোয় পুরে
দেখো, রোদ্দুরের কথা ভাবছি
ভিজে যাচ্ছে কথা, শোবার ঘর, বালিশের চারপাশ।


অবিরাম ঝরছে বৃষ্টি, চৈত্রময় জল উড়ছে ক্লান্তিহীন;
সিদ্ধান্ত দিতে অপারগ তবু মৌলিক অভিধান!

দেখো, উড়ছে গানের খাতা
নুয়ে পড়ছে বিশ্বাস, পাঠশালা, খেত-খামার
প্রাণপণ আটকে যাচ্ছে স্বর, গীতবিতানের ছন্দ
সিদ্ধান্ত দিতে অপারগ তবু মৌলিক অভিধান!

নিজেকে মুঠোয় পুরে সারস্বত জীবনের যে খেলা
ব্যক্তিগত অভিধানে তা এক অজ্ঞেয় ফুল চিরদিন।


ছুটিবাসরীয়
মঞ্চ থেকে নেমে, তেড়ে আসছিলো কয়েকটি গর্ভবতী মাকড়সা। আমরা যখন হলুদ বিকেলের চিত্রকল্পে বেদনা ঢেলেছি, ঝালাই করছি শোকসন্তপ্ত দিন-রাতের অদেখা কাব্যভাষা। আমাদের ঘিরে প্রতিদিন উড়ে যাওয়া বিবর্ণ পাতাদের মর্মর থেকে তুলে নিচ্ছি স্লোগানের তরতাজা ধ্বনি। বুঝিনি, কোন চক্রে তখনও ঝুলে আছে মাকড়সার আদিনিবাস! পাশাচক্র হলে খেদ ছিলো না; কেননা, শকুনির দশমহাবিদ্যা ফলপ্রসূ ছিলো সেখানে। অথচ এই সবুজসভায় না ছিলো যন্ত্রী, না ছিলো গায়ক। বিনির্মাণ ভাবনায় চোখ রেখে, জেগে ছিলাম পরস্পর। আর চিন্তা বিদ্ধ করে বার বার ঢুকে পড়ছিলো মাকড়সা প্রসঙ্গ, যে যার অবস্থানে আমরা কি কাতর ছিলাম খুব?

সুনিপুণ গদ্যকার ফেলে রেখে চলে গেলো এইটুকু বিকেলের সভা একদিন। কতিপয় উত্তরসূরি রেখে মাকড়সা হলো অন্তর্ধান। তবু অস্থির অন্ধকার, ডামাডোল চারিপাশে। থেমে গেছে ছুটিবাসরীয় দূরন্ত কোলাহল!


যোদ্ধা
নেমে যাচ্ছে যারা সন্ন্যাসীর বেশে
জলাভূমির দিকে-ধীর পদক্ষেপে,
পাখিদের আহ্বান তাদের জন্যই;
তাদের জন্যই চিরদিন-
ভালোবাসা নামে মায়ের আঁচল থেকে
ফোঁটায় ফোঁটায়; বাঙলার মেঠোপথ থেকে
শক্তি নিয়ে ওরা হয়ে উঠেছে দামাল,
ধূলিস্নিগ্ধ বিকেলের ওম আর ঘাসের বারান্দা
ওদের আশ্রয় দিয়ে ধন্য হয়;
ভয়হীন চিত্তে তাই বার বার উঠে আসে তারা
সংশয়-সঙ্কটে বাঙলার;
শাটল ট্রেনের ক্ষিপ্র গতি, তথাপি নিরুদ্বেগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।