ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ঔপনিবেশিক ভারতের বিলাতি নারীরা | আদনান সৈয়দ (পর্ব ২৯)

ধারাবাহিক রচনা ~ শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
ঔপনিবেশিক ভারতের বিলাতি নারীরা | আদনান সৈয়দ (পর্ব ২৯)

পর্ব ২৮ পড়তে ক্লিক করুন

তোমাদের স্মরি |
তদিনে বিলাতি নারীদের ভারত-বাস অনেকদিনের পুরনো ঘটনা। কোনো কোনো বিলাতি নারী ভারতের মাটিতে সন্তান জন্ম দিয়ে পর্যায়ক্রমে নাতি-পূতি নিয়েও বেশ সুখেই দিনাতিপাত করছেন।

অনেক বিলাতি নারী ভারতীয় কাউকে বিয়ে করে রীতিমতো ভারতীয়ই বনে গেছেন। এক চিলতে সুখের খোঁজে প্রত্যেকেই তারা যেন যুদ্ধক্ষেত্রের একেকজন সৈনিক। কিন্তু অবাক বিষয় হলো, বিলাতি সমাজের মাথা থেকে বৈষম্যের ভূত কখনোই নামেনি। শেষ পর্যন্তও ভারতকে তারা নিজের দেশ বলে মনে করে নি। সব সময়ই নিজেকে প্রভুর আসনে বসিয়ে ভারতীয়দের সাথে কথা বলতে ভালোবেসেছে। ফলে বিচ্ছিন্ন কিছু বিলাতি নারীদের ভারতপ্রীতি দেখেও তৎকালীন বিলাতি সমাজ কটাক্ষ করতে ছাড়ে নি। “মানসিকভাবে অসুস্থ আর ‘সেক্সুয়েলি পারভারটেড’ না হলে কোনো বিলাতি নারীর পক্ষে ভারতীয় পুরুষদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করা সম্ভব নয়। ”

এমনটা শুধু বিলাতিদের দিক থেকেই নয়, ভারতীয়দের দিক থেকেও ছিল। কোনো ভারতীয়ের—বিলাতি নারীকে বিয়ে করা মানেই তিনি তার ধর্ম এবং সংস্কৃতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন। বিলাতি মেম অনিতা বেভারিজের একটি স্মৃতিচারণায় চোখ রাখা যাক। তিনি তার ঘনিষ্ঠ-পরিচিত একজন বিলাতি নারী সম্পর্কে বলছেন, “সে পূর্ববঙ্গের একজন মুসলমানকে বিয়ে করে বেশ সুখেই দিনাতিপাত করছে। স্বামী এবং দশটি সন্তান নিয়ে বেশ সুখের সংসার তার। শুধু তাই নয়, নিজেকে সে পুরোপুরি ভারতীয় বানিয়ে ফেলেছে। ভারতীয় কাপড়, ভাষা, সংস্কৃতি সব রপ্ত করে সে এখন সত্যিকারের একজন সুখি মানুষ। ”



১৯০৪ সালে তার (মার্গারেট এলিজাবেথ নোবল/সিস্টার নিবেদিতা) বিখ্যাত বই The Web of Indian Life; The Englishman প্রকাশিত হয় এবং বিলাতি মহলে বেশ আলোড়ন তোলে। বইটিতে তৎকালীন বিলাতি সমাজ নিয়ে কটাক্ষ করা হয়। ১৯০২ সালে Christianity paled beside Hinduism শীর্ষক প্রদত্ত এক ভাষণে বিলাতি সমাজকে তুলাধুনো করে ছাড়েন মার্গারেট। ভাষণে তিনি স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করলেন “পশ্চিম থেকে আমাদের শেখার কিছুই নেই। হিন্দু নারী তারা বিদূষী এবং তাদের আত্মা অনেক পবিত্র। সে তুলনায় পশ্চিমা নারীরা অনেক স্থূল এবং ক্ষমতালোভী। পশ্চিমারা টাকা ছাড়া জীবনে আর কিছুই বোঝে না। ”



ঔপনিবেশিক ভারতে এমন ক’জন বিলাতি নারীর নাম আমরা জানি, যারা নিজেদের শুধু ভারতীয় বলে পরিচয়ই দিতেন না, তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। একই সঙ্গে তারা ছিলেন বিলাতি সমাজ ব্যবস্থার কঠোর সমালোচক। এসব বিলাতি নারীরা ভারতকে নিজের দেশ মনে করেছিলেন এবং মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ভারতীয় থাকার চেষ্টা করেছেন। চলুন, সেরকম কয়েকজন বিলাতি নারীর সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক।

১৮৬৭ সালে আয়ারল্যান্ডের ছোট একটি গ্রামে মার্গারেট এলিজাবেথ নোবলের জন্ম। বাবা স্যামুয়েল রিচার্ড নোবল ছিলেন একজন পাদ্রী। তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষ তথা খোদার সৃষ্টির সেবা করাই হলো শ্রেষ্ঠ ইবাদত। বিশ্বাসের এই মন্ত্রটি কন্যা মার্গারেট শৈশবেই রপ্ত করেছিলেন। পড়াশোনা করেছেন লন্ডনের হলিফেক্স কলেজে এবং পরবর্তীতে শিক্ষকতার কাজে নিয়োজিত হন। কিন্তু মার্গারেটের মনে শান্তি নেই। সারাক্ষণ প্রাণটা ভালো কিছু করার জন্য কাঁদে। মানুষের জন্য তিনি নিজের জীবনটা বিলিয়ে দিতে চান। মনটা তার সবসময়ই অশান্ত থাকে। তিনি মানবতা, শান্তি এবং নির্যাতিত মানুষের পক্ষে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লিখতে শুরু করেন। এবং ধীরে ধীরে লন্ডনের শিক্ষিত সমাজে একজন সমাজবাদী হিসেবে নাম অর্জন করেন।

১৮৯৫ সালে ধর্ম এবং মানবতা নিয়ে একটি বক্তৃতা করার জন্য লন্ডন যান স্বামী বিবেকানন্দ। আরো অনেকের সঙ্গে দর্শক সারিতে মার্গারেটও ছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিলেন, তার সঙ্গে ভারত চলে যাবেন এবং জীবনের বাকি সময়টা মানবতার জন্য উৎসর্গ করবেন। তার ভাষায়, “ধরা যাক স্বামী যদি লন্ডন না আসতেন তাহলে আমার গোটা জীবনটাই অসমাপ্ত থেকে যেত। আমি সবসময় বিশ্বাস করতাম, ভালো কিছু একটা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমার বিশ্বাস ছিল ভালো কিছু আমাকে ডাকবে এবং আমি সেখানে জড়িত হব। ” ১৮৯৮ সালের ২৮ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের ইচ্ছা অনুযায়ী মার্গারেট এলিজাবেথ নোবল লন্ডনে তার যাবতীয় আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের ফেলে কলকাতায় চলে এলেন। বিবেকানন্দ তার নতুন নাম দিলেন ‘সিস্টার নিবেদিতা’। কলকাতায় এসে তিনি বাংলা ভাষা শিখতে এবং স্বামীজির দীক্ষায় নিজেকে তৈরি করতে শুরু করলেন। তার ভাষায়, “নতুন একটি দেশে আমার যেন আরেকবার জন্ম হলো। ”

১৯০৪ সালে তার বিখ্যাত বই The Web of Indian Life; The Englishman প্রকাশিত হয় এবং বিলাতি মহলে বেশ আলোড়ন তোলে। বইটিতে তৎকালীন বিলাতি সমাজ নিয়ে কটাক্ষ করা হয়। ১৯০২ সালে Christianity paled beside Hinduism শীর্ষক প্রদত্ত এক ভাষণে বিলাতি সমাজকে তুলাধুনো করে ছাড়েন মার্গারেট। ভাষণে তিনি স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করলেন “পশ্চিম থেকে আমাদের শেখার কিছুই নেই। হিন্দু নারী তারা বিদূষী এবং তাদের আত্মা অনেক পবিত্র। সে তুলনায় পশ্চিমা নারীরা অনেক স্থূল এবং ক্ষমতালোভী। পশ্চিমারা টাকা ছাড়া জীবনে আর কিছুই বোঝে না। ” স্বাভাবিকভাবে যা হবার তাই হলো। সিস্টার নিবেদিতা ধীরে ধীরে বিলাতিদের চক্ষুশূলে পরিণত হলেন। তাদের কথা হলো, যে নারী কিছুদিন আগেও আমাদের রাণীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল, সে কিনা এখন ভারতপ্রেমে নিমজ্জিত হয়ে গেছে!

সিস্টার নিবেদিতা এসবে কান দিলেন না বরং তিনি ধীরে ধীরে পরিচিত হলেন সেই সময়ের বিখ্যাত রাজনীতিক নেতা জি. কে. গোখলে, অরবিন্দ ঘোষ এবং এমন আরো অনেকের সঙ্গে। ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জন যখন বাংলা ভাগ করার ঘোষণা দিলেন, সিস্টার নিবেদিতা দুই বাংলার সংহতি রোধে বিলাতিদের নেওয়া সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রকাশ্যে মাঠে নেমে পড়লেন। ১৯০৭ সালে ইংরেজ সরকারের সাথে সিস্টার নিবেদিতার সম্পর্ক খারাপের দিকে চলে যায় এবং তাকে যেকোন সময় গ্রেফতার করা হবে বলে ঘোষণা দেয় ইংরেজ কতৃর্পক্ষ।

সিস্টার নিবেদিতার কপাল ভালো, ১৯০৮ সালে তিনি বিলেতে এবং আমেরিকায় অতিথি ভাষণ দেওয়ার আমন্ত্রণ পান এবং সেই কারণে গ্রেফতারি পরোয়ানা থেকে সাময়িক অব্যাহতি লাভ করেন। এদিকে ভারতের বিলাতি মহলে তার লেখা The Web of Indian Life; The Englishman বইটি এতই সমালোচিত হয় যে, খ্রিস্টান মিশনারি কর্তৃপক্ষ সিস্টার নিবেদিতাকে ‘গাদ্দার’ বলে আখ্যায়িত করে। সিস্টার নিবেদিতা আজীবন মানবতার জন্য, ভারতের নিপীড়িত মানুষের জন্য এবং মানব কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গিয়েছিলেন। ১৯১১ সালে মহিয়ষী এই নারীর মৃত্যু ঘটে।


(সিস্টার নিবেদিতা ও এনি বেসান্ত)

বিলাতি নারী এনি বেসান্তের কথা আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়ই? খোদ বিলেতে বসে চার্চের বিরুদ্ধে কথা বলে রীতিমত হৈ চৈ ফেলে দেওয়া একজন নারী। জন্ম নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কথা বলে তিনি বিলেতের চার্চের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিলেন। নারীর ক্ষমতায়ন এবং অধিকার নিয়ে সেই আঠার দশকের প্রথম দিকের এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। এনি বেসান্ত যখন লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছিলেন, তখন ভারতের জাতীয়তাবাদী নেতা গান্ধীজির সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। ১৮৭৯ সালে থিয়োসোফিকেল সোসাইটি ভারতে তাদের কাজকর্ম পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই বিলাতি প্রশাসন এর বিরুদ্ধে নেমে পড়ে।

১৮৯০ সালে হেলেনা বেভাতস্কির সাথে পরিচিতি হয়ে থিয়োসোফিকেল সোসাইটির সদস্যপদ লাভ করেন এনি। তখন তার বয়স চল্লিশ। ১৮৯১ সালে হেলেনা বেভাতস্কির মৃত্যু হয় এবং ১৮৯৩ সালে এনি লন্ডন থেকে ভারতের মাদ্রাজে পাড়ি জমান। ভারতে এসেই বিলাতি নারী এনি খোদ বিলাতি প্রশাসনের কড়া সমালোচনায় নেমে পড়েন এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের হয়ে সরাসরি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সাধারণত যা হয়, ব্রিটেনের প্রতি প্রকাশ্য সমালোচনার দায়ে ১৯১৭ সালে এনি বেসান্ত গ্রেফতার হন। জেল থেকে বের হওয়ার পর এনি বেসান্তকে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন করা হয়। (কংগ্রেসের ইতিহাসে প্রথম নারী সভাপতি)। আজীবন ভারতের স্বাধীনতার জন্য ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন এনি। ১৯৩৩ সালে মাদ্রাজের নিজ বাড়িতে মহিয়ষী এই নারীর মৃত্যু হয়।

ঊনিশ শতকের প্রথম দিক থেকেই মিশনারির কাজে প্রচুর বিলাতি নারী ভারতে আসতে শুরু করেন। এসে বিভিন্নরকম সামাজিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক কাজে ভারতের জন্য নিজেদের বিলিয়ে দেন এবং পরবর্তী জীবনে তাদের অনেকেই পুরোদস্তুর ভারতীয় হয়ে যান। বিলাতি নারী এমি কারমিশেল জীবনের পঞ্চাশটি বছর মিশনারির কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং নিজেকে একজন ভারতীয় বলতেই বেশি ভালোবাসতেন। ১৮৯০ সালে দক্ষিণ ভারতের নিজ বাসভূমিতে প্রচুর ভারতীয় অনাথ শিশুদের তিনি শুধু আশ্রয়ই দেননি, পাশাপাশি তাদের নিজের সন্তানের মতো মানুষ করেছিলেন।

এমন ভারতপ্রীতির কারণে ব্রিটিশ সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি এবং তাকে বিলাতি-সমাজচ্যুত করা হয়। মিশানারিতে কাজের সুবাদে অনেক বিলাতি নারীই তৎকালে ভারতের প্রেমে পড়েন এবং ভারতের বিভিন্নরকম জনহিতকর কাজে নিজেদের নিবেদিত করেন। বিলাতি নারী মেরি ক্রিসলিয়েবও এর ব্যতিক্রম নন। তিনি তার জীবন সঁপে দিয়েছিলেন ভারতীয় নারীদের সেবা এবং শিক্ষাদানে। তার চোখে ভারতের মানুষেরাই ‘পৃথিবীর অন্যতম সেরা মানুষ’। মেরির নিজের ভাষায়, “এরা(ভারতীয় রমণী) এত ভদ্র এবং সুন্দর যে তা আমার কল্পনারও বাইরে। ভূভারত ছাড়া আর কোথায় তাদের দেখা মিলবে?”

বিলাতি মেম সি. এফ এনড্রিউসের কথাই ধরুন না। ১৯২০ সালে বিলেত থেকে ভারতে আসেন মিশনারির কাজে, আর ভারতে এসেই তিনি হয়ে গেলেন গান্ধীবাদি। শুধু গান্ধীজির মতাদর্শেই উদ্বুদ্ধ হলেন তা নয়, বিলাতি এই নারীও নিজেকে পরিচয় দিতেন ‘ভারতীয়’ বলে। বলার অপেক্ষা রাখে না, মিশনারির কাজে ভারতে আসা অনেক বিলাতি নারীই উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা। মিসস লুসির কথাই ধরা যাক। বিলেতে তার বাবা ছিলেন একটি কারখানার মালিক। লুসি শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণেই ভারতে আসেন নি, তার অপর ইচ্ছেটি ছিল আর্ত মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা।

ভারতে এসে মিস ইলা লুসি উচ্চপদস্থ বিলাতি কর্মকর্তাদের মতোই জীবন যাপন করতেন। মিশনারির ‘জেনানা বাইবেল’ এবং ‘মেডিকেল মিশনে’ বিনা পারিশ্রমিকে সারা জীবন কাজ করে গেছেন। ভারতীয় মহলে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি ধীরে ধীরে তিনিও বিলেত সরকারের বিরাগভাজন হন। বিলাতি মেম মিসেস স্টারের কথা ধরা যাক। পেশায় তিনি ডাক্তার। তার স্বামীও একজন ডাক্তার। ১৯২৩ সালে আফগানিস্তানের যুদ্ধে তার ডাক্তার স্বামী গুলিবিদ্ধ হন এবং মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পরও এই বিলাতি নারী ভারত ছেড়ে চলে যান নি বা ডাক্তারি পেশা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন নি। বরং মহৎ ডাক্তারি পেশায় জীবনের শেষদিন পর্যন্ত নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। জীবনের শেষদিকে তিনি ভারতীয় পোশাক পরতে ভালোবাসতেন এবং পেশতু ভাষায় অনর্গল কথা বলতেন।

মিশনারির কাজে এসে অনেক বিলাতি নারীদের এমন ভারতপ্রীতির বিষয়টিও তৎকালীন বিলাতি সমাজ ভালোভাবে নেয় নি। খোদ বিলেত থেকে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নোটিশ জারি করা হয়। তাতে বলা হয়েছিল, “মিশনারির কাজ শুধু ধর্ম প্রচার করা, ভারতীয়দের গুণ কেত্তন করা নয়। আমরা মনে করি ভারতে এই মিশনারি কার্যক্রম অনেকাংশেই বিলাতিদের মাথা নত করে দিয়েছে। ”

বলাই বাহুল্য, মিশনারির হয়ে অনেক বিলাতি নারী খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার করতে এসে ভারতীয় সমাজ এবং মানুষের মনের ভাষাটি রপ্ত করার চেষ্টা করতেন। বিলাতি নারী মেরি ক্রিসলিয়েবের ভাষায়, “তাদের(ভারতীয়) কথা আগে শুনতে হবে। তারপর তারা বাইবেলের কথা শুনবে। ”

ভারতপ্রেমী এমন সব বিলাতি নারীদের কথা ভারতীয়রা ভুলবে কিভাবে? ভারতের মাটিতে তাদের ত্যাগ এবং ভালোবাসা নিত্যই যেন আদর আর ভালোবাসায় লুটোপুটি খায়।

পর্ব ৩০ পড়তে ক্লিক করুন



বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।