ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

জেগে ওঠা চরে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
জেগে ওঠা চরে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক চিচিঙ্গা ক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহনের মেঘনা নদীর জেগে ওঠা চরে সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। শীত মৌসুমে শশা, করল্লা, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, শিম, খিরা, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করছেন চরের বুকে।

নিজেদের মেধা এবং চাষাবাদের কৌশল কাজে লাগিয়ে তারা ফসল উৎপাদন করে যাচ্ছেন।

তবে সঠিক পরামর্শ এবং চাষাবাদে পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেলে চরের বুকে সবজি চাষে বিপ্লব ঘটতো বলে মনে করেন কৃষকরা।  

সরেজমিনে চররমনী মোহনের মজুচৌধুরী হাটের পশ্চিম এবং দক্ষিণের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরগুলো ঘুরে সবজি আবাদের চিত্র দেখা গেলেও অনেক জমি অনাবাদিও দেখা গেছে।

কৃষকরা জানায়, মেঘনার বুকে বেশ কয়েকটি চর জেগে ওঠেছে। মূল ভূ-খণ্ড থেকে চরগুলো বিচ্ছিন্ন। চরের মাটি এবং আবহাওয়া সবজি আবাদের জন্য বেশ উপযোগী। ওইসব চরের কিছু অংশ জুড়ে সবজির চাষ করা হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ অংশই অনাবাদি রয়ে গেছে। সবজি চাষ করতে হলে লাখ লাখ টাকার প্রয়োজন। টাকার জোগান না থাকায় চরের পুরো জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানায় চাষিরা।  

তারা বলেন, মাটির গুণাগুণ অনুযায়ী সবজি চাষ করতে হয়। অনেক কৃষকের মাটির গুণাগুণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ নিয়ে সবজি আবাদে আরও বেশি উৎসাহিত হতো।  

মো. জসিম উদ্দিন নামে এক সবজি চাষি বাংলানিউজকে জানান, তিন গত ৮ বছর থেকে চরের জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে আসছেন। নিজস্ব পদ্ধতি ব্যবহার করে তিনি চাষাবাদে সাফল্য পেয়েছেন। বর্তমানে চার একর জমিতে তিনি শশা এবং চিচিঙ্গার চাষ করেছেন। ৬ মাসে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে তিনি ৫ লাখ টাকার শশা বিক্রি করেছেন। চিচিঙ্গা বিক্রি করেছেন প্রায় এক লাখ টাকার। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পুরো মৌসুমে ২০ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবেন তিনি।  

জসিম তিন একরের আরেকটি জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। এখান থেকে ৫ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করার আশা প্রকাশ করছেন তিনি।  

তিনি বলেন, পুরো চরে ১৫-২০ জন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। মাঝে মধ্যে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও ফলন ভালো হলে এবং ন্যায্য দাম পেলে ক্ষতিও পুষিয়ে আসে। তবে বেশিরভাগ কৃষক টাকার অভাবে স্বল্প পরিসরে চাষাবাদ করছেন।  

এদিকে বিগত ৪/৫ বছর থেকে এ চরগুলোতে সবজি চাষ হলেও বিষয়টি অনেকটা অজানা স্থানীয় কৃষিবিভাগের কাছে।  

জানতে চাইলে চররমনী মোহন ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ব্লকের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ক্লিনটন দাস বাংলানিউজকে বলেন, নদীর বিচ্ছিন্ন চরে সবজির আবাদ হচ্ছে- সেটা আমি জানতাম না। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।