ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মাদারীপুর হর্টিকালচারে এক গাছেই ৮ প্রজাতির আম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
মাদারীপুর হর্টিকালচারে এক গাছেই ৮ প্রজাতির আম এক গাছে আট প্রজাতির আম

মাদারীপুর: মাদারীপুর হর্টিকালচারে একটি আম গাছে একসঙ্গে আট প্রজাতির আম ধরেছে। এই প্রথম এক গাছেই আট প্রজাতির আম ধরায় বিস্মিত সাধারণ মানুষ।

কৌতুহলবশত কলম পদ্ধতিতে এ আম গাছের উদ্ভাবন করেছেন উদ্যানতত্ত্ববিদেরা এবং সফলও হয়েছেন।  

এখান থেকে আরও গাছ তৈরির মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে হর্টিকালচার কর্তৃপক্ষের।

হর্টিকালচার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে একটি আম গাছের দশটি শাখার সঙ্গে ১০ প্রজাতির আম গাছের ডাল বসানো হয়। এর মধ্যে ৮ প্রজাতির গাছ বেঁচে যায়। এবং গাছটি দ্রুত বড় হতে থাকে। এর আগেও গাছটিতে আম ধরেছিল। তবে ২/৩টি প্রজাতির আম হয়েছিল। তবে এ বছরই সব প্রজাতির আমের মুকুল আসে এবং আম বড় হতে থাকে।  

বর্তমানে গাছটিতে মিয়াজাকি, পালমার্ক, থাই জাম্বু, কাটিমন, বারি আম-১১, কিউজাই, হিমসাগর ও ব্যানানা জাতের মোট আট প্রজাতির আম ধরেছে। এর মধ্যে ১২ মাসি আমের ২টি প্রজাতি রয়েছে। প্রত্যেক জাতের সর্বোচ্চ ১০টি এবং সর্বনিম্ন ৫/৬টি করে আমের ফলন এসেছে।

বর্তমানে হর্টিকালচার সেন্টারে এ ধরনের নতুন গাছ তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে আরও ৩টি গাছে ৫টি করে প্রজাতির কলম করা হয়েছে। একসময় সারাদেশে এ ধরনের আম গাছের বিস্তার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন এখানকার উদ্যানতত্ত্ববিদরা।

জানা গেছে, নানা আকার ও বর্ণের আম ঝুলে আছে গাছটিতে। গাছটির উচ্চতা প্রায় ১০ ফুটের মতো। লাল, সবুজ ও খয়েরি রঙের এসব বাহারি আমগুলো দেখতে গোল, চ্যাপ্টা ও কলার মতো লম্বাকৃতির। গাছটির কয়েকটি ডালে আম পরিপক্ব হয়ে উঠেছে আবার কিছু ডালে মাত্র আমের মুকুলও এসেছে। এক গাছে ৮ প্রজাতির বাহারি আম দেখে কৌতুহলী হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, 'হর্টিকালচারে এক গাছে নানা রকমের আম ধরার খবর পেয়ে অনেকেই দেখতে আসছেন গাছটি। এ ধরনের গাছ বাড়িতে লাগাতে আগ্রহ তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এ ধরনের গাছ ছড়িয়ে দিতে পারলে সারা বছরই আমের চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। তাছাড়া এক গাছ থেকেই আট রকম আম পাওয়ায় এ ধরনের গাছের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। নানা এলাকা থেকে গাছটি দেখতে আসছেন অনেকেই।

মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশুতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, এটি একটি অভিনব কলম পদ্ধতি। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে বীজের চারা থেকে কলম করার মাধ্যমে এ ধরনের গাছ তৈরি করা হয়েছে। একই গাছে বিভিন্ন প্রজাতির আমের সংমিশ্রণ তৈরি করায় বছরের লম্বা সময় ধরে এই গাছটি থেকে আম পাওয়া যাবে। '

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের গাছের উদ্ভাবনে সময় লাগে কমপক্ষে ২ থেকে ৪ বছর। সব মিলিয়ে গাছে ফল আসতে ৪ বছর সময় লেগে যেতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে এ গাছ বাজারজাত করতে সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রথমত বীজ থেকে চারা তৈরি করতে হবে। এরপর গাছের শাখার ওপর নির্ভর করবে কয়টি জাতের কলম দেওয়া যাবে। এতে সময় লেগে যায় ২/৩ বছর। আমরা এ ধরনের গাছ উদ্ভাবনের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে আর ৩টি গাছে আমরা কলম করেছি। সেখানে ৪/৫টি প্রজাতি রয়েছে। '

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।